গর্বিত: রঞ্জিতের ছেলে রাজ
মাকে যকৃৎ (লিভার) দিয়ে বাঁচিয়ে দৃষ্টান্ত গড়েছিল মেয়ে। এ বার বাবাকে বাঁচাতে একই ভূমিকায় ছেলে।
কয়েক মাস আগে লিভারের অসুখ ধরা পড়ে বসিরহাটের সাঁইপালার বাসিন্দা বছর তেতাল্লিশের বেবি ঘোষের। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মাকে বাঁচাতে একমাত্র মেয়ে বছর তেইশের ঐন্দ্রিলা লিভার দেয় মাকে। সুস্থ হয়ে ওঠেন বেবি। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি বসিরহাটে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় অনার্স নিয়ে প্রথম বর্ষে পড়ছেন রাজ কুণ্ডু। এসএন মজুমদার রোডে বাড়ি তাঁদের। বছরখানেক ধরে অসুস্থ তাঁর বাবা রঞ্জিত। দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা হয়। পরে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর অধীনে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, লিভার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে লিভার প্রতিস্থাপন না করলে রঞ্জিতকে বাঁচানো সম্ভব নয়।
শুরু হয় লিভারের খোঁজ। অনেক চেষ্টা করেও তা মেলেনি। রঞ্জিতের স্ত্রী সুজাতা বলেন, ‘‘স্বামীর শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। সে সময়ে বাবাকে লিভার দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে আমাদের একমাত্র ছেলে রাজ।’’
রঞ্জিতের ছোট ভাই জয়ন্ত বলেন, ‘‘দাদার জন্য আমরা বহু চেষ্টা করেও লিভার জোগাড় করতে না পারায় বাঁচার আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলাম। ভাইপো নিজেই বলে, চিন্তা কোরো না। আমি বাবাকে বাঁচাতে লিভার দেব।’’ পরিবারের ছেলের এমন ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত রঞ্জিতের মামা গৌতম হালদারও।
হাসপাতালে বাবার পাশাপাশি বেডে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে রাজকে। আজ বৃহস্পতিবার, ভোর থেকে শুরু হবে অস্ত্রোপচার। একজনের লিভারের অংশ অন্য জনের শরীরে বসানো হবে। সকলেই আশাবাদী, সন্তানের চেষ্টা বিফলে যাবে না। সুস্থ হয়ে বাবাকে নিয়ে ঘরে ফিরবে ছেলে।
এ দিন বাবার পাশের বিছানায় শুয়ে মোবাইলে রাজ বলে, ‘‘বাবার জন্য এটুকু করতে পেরে আমি গর্বিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy