Advertisement
২০ মে ২০২৪
Kali Puja 2023

কাহিনি, কিংবদন্তি কালীমন্দির ঘিরে

বসিরহাট শহরের গাঁ ঘেঁষে চলে গিয়েছে ইছামতী নদী। নদীর পাড়ে সংগ্রামপুর কালীবাড়ি। ইছামতীর তীরে মানসিংহের সঙ্গে বাংলাদেশের যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের যুদ্ধ হয়।

এই মন্দির কে ঘিরেই রয়েছে বহু গল্প।

এই মন্দির কে ঘিরেই রয়েছে বহু গল্প। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

বসিরহাটের সংগ্রামপুরে দক্ষিণাকালী প্রতিমার পুজো পাঁচশো বছর পেরিয়েছে। এই মন্দির নিয়ে জড়িয়ে আছে অনেক কাহিনি ও কিংবদন্তি। শ্যামাপুজোর দিন আধানি, কামারডাঙা, মেরুদণ্ডী, গন্ধর্বপুর, সংগ্রামপুর, শিবহাটি, বসিরহাটের কয়েক হাজার ভক্ত পুজো দিতে আসেন। পরিবারের মঙ্গল কামনায় বাতি-প্রদীপ জ্বালান।

ভক্তদের বিশ্বাস, মা কালী এখানে লালপাড় শাড়ি পরে ভক্তদের খোঁজ নিতে গভীর রাতে গ্রামে ঘুরে বেড়ান। মটর ডালে কচুরমুখির সঙ্গে এঁচোড়-চিংড়ি ও সাদা ভাতের ভোগ রান্না হয় মাটির হাঁড়িতে। মন্দির সংলগ্ন এক মাইলের মধ্যে মাটির তৈরি কালী প্রতিমা গড়ে পুজো না করারই রীতি বিদ্যমান।

বসিরহাট শহরের গাঁ ঘেঁষে চলে গিয়েছে ইছামতী নদী। নদীর পাড়ে সংগ্রামপুর কালীবাড়ি। ইছামতীর তীরে মানসিংহের সঙ্গে বাংলাদেশের যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের যুদ্ধ হয়। কথিত আছে, সেই থেকে এই জায়গার নাম হয় সংগ্রামপুর। সে সময়ে ইছামতীর তীরে সংগ্রামপুরে ঘন জঙ্গলের মধ্যে ছিল কালীর থান। কালীভক্ত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ইছামতীর বুকে নৌকো বিহারের সময়ে এক রাতে স্বপ্ন দেখেন, ইছামতীর উত্তর দিকের জঙ্গলের মধ্যে আলো ঠিকরে বেরোচ্ছে। তার মধ্যে দাঁড়িয়ে এক মহিলা বলছেন, এখানে কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করতে। পর দিন সকালে স্বপ্নের কথা শুনে মন্ত্রীর পরামর্শে কৃষ্ণচন্দ্র জঙ্গল পরিষ্কার করে সেখানে দক্ষিণাকালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মন্ত্রীকে বলেন। এ সব কথা জানা যায় মন্দির উন্নয়ন কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে। কালের শ্রোতে এক দিন সেই মন্দিরের কাঠামো ভেঙে পড়লে সেখানে টাকির রায়চৌধুরী জমিদারেরা কাছারিবাড়ি করেন।

বাচস সর্দারকে তা দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এলাকার বয়স্ক মানুষেরা জানান, এক রাতে দেবী বাচসের স্বপ্নে জানান, এখানে কালী মন্দির নির্মাণের জন্য। তাল, নারকেল পাতা, খড়, গোলপাতার ছাউনি দেওয়া মন্দির তৈরি হয়। পরবর্তীকালে টাকির জমিদার সূর্যকান্ত রায়চৌধুরী ইট-কাঠের মন্দির তৈরি করেন। সেই মন্দিরে দেবীর পুজোর দায়িত্ব পান শ্যামাচরণ চক্রবর্তী। টাকির জমিদারেরা দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে সংগ্রামপুর কালীবাড়িতে পাঁঠা বলি দেন।

বয়স্কদের দাবি, এক বার মন্দিরের পুকুরের পোনা মাছ ধরে রান্না হয়। ব্রাহ্মণেরা খেতে বসে দেখেন, তা চিংড়ি মাছ। সেই থেকে সেবাইতদের রান্না করা ভোগে চিংড়ি মাছ দেওয়ার রীতি চলে আসছে। দুর্গাষ্টমীতে গ্রামের মানুষ আগে কালীমন্দিরে পুজো দিতেন। এখানে মহিলারা পুজোর সরঞ্জাম গোছালেও দেবীর ঘট বা মূর্তির গায়ে হাত দেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basirhat Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE