Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
JMB

JMB Linkman: পাড়ার ছেলেই জেএমবি লিঙ্কম্যান! লালুর কীর্তিতে হতবাক বারাসতের মধুমুরলী

আসল নাম রাহুল সেন। কিন্তু ও নামে তাকে প্রায় কেউ চেনেই না। সকলেই জানে, লালু। সম্প্রতি বছর আটত্রিশের লালু আমদানি-রফতানির ব্যবসা শুরু করেছিল।

ধৃত জেএমবি লিঙ্কম্যান রাহুল সেন।

ধৃত জেএমবি লিঙ্কম্যান রাহুল সেন। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বারাসত শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ১৭:১০
Share: Save:

লালু যে এমন কীর্তিমান, তা ভাবতেই পারছেন না বারাসতের মধুমুরলী এলাকার বাসিন্দারা। সামনে আমদানি-রফতানির ব্যবসা, কিন্তু তলায় তলায় জঙ্গিদের সাহায্য!

Advertisement

আসল নাম রাহুল সেন। কিন্তু ও নামে তাকে প্রায় কেউ চেনেই না। সকলেই জানে, লালু। সম্প্রতি বছর আটত্রিশের লালু আমদানি-রফতানির ব্যবসা শুরু করেছিল। বাড়িতে সাইনবোর্ডও ঝুলিয়েছিল। কিন্তু তার পিছনে সে যে অন্য কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল তা ভাবতে পারেনি কেউই। বুধবার লালুর কীর্তি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। আর তাতেই চমকেছে মধুমুরলী।

বুধবার বিকেলে লালুর বাড়িতে হানা দেয় এসটিএফের একটা দল। সে সময় বাড়িতেই ছিল সে। টাস্ক ফোর্স তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পাড়ার লোক তো দূর অস্ত্‌, লালুর মা সন্ধ্যা সেনও ছেলের কাজকর্মের কথা জানতেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা (এসটিএফ) ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র পরীক্ষা করে। তার পর লালুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ঢাকায় ওর শ্বশুরবাড়ি। ও নিজের কাজ নিয়ে আমাদের কিছু বলত না।’’

পাড়ার লালু জঙ্গি লিঙ্কম্যান! বুধবার বিকেল থেকে পাড়ায় ঘটে যাওয়া একের পর এক পর্ব দেখে স্তম্ভিত স্থানীয় বাসিন্দারা। মধুমুরলীর বাসিন্দা সুখরঞ্জন সাহা বলছেন, ‘‘ও (লালু) কী কাজ করত জানতাম না। তবে মাঝে শুনে ছিলাম আমদানি-রফতানির ব্যবসা করে। ওর বাবা বলেছিলেন, বাংলাদেশে ও বিয়ে করেছে। ওকে ছোটবেলা থেকে চিনি। আমাদের চোখে তেমন সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়েনি। তবে ওর মধ্যে একটা দাদাগিরি ভাব ছিল। বড়লোকি চাল দেখাত।’’

Advertisement

এসটিএফ কর্তারা লালুর থেকে উদ্ধার করেছে একটি আইফোন, ল্যাপটপ এবং প্রচুর নথি। একটি এয়ারগানও মিলেছে তার বাড়িতে। তদন্তকারীদের মতে, রবিবার হরিদেবপুর থেকে ধৃত তিন জেএমবি জঙ্গিকে এ রাজ্যে সাহায্য করেছিল লালুই। তাঁরা জানতে পেরেছেন, লালু ‘ধুর’ পাচারের সঙ্গে জড়িয়েছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে ঢুকতে সাহায্য করত লালু। এই চক্রই ‘ধুর’ পাচার নামে পরিচিত। এসটিএফের মতে, এই চক্রে জড়িয়ে পড়েই জেএমবি লিঙ্কম্যান হিসাবে কাজ করতে শুরু করে লালু।

বাংলাদেশ থেকে যে সব জেএমবি জঙ্গি এ রাজ্যে পা রাখত, তাদের নিরাপদে রাখা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করত লালুই। তাদের আর্থিক সাহায্যও করত সে। এমনকি নিজের প্রভাব খাটিয়ে বাংলাদেশ থেকে এদেশে ঢুকে পড়া ওই সব জঙ্গিদের ভারতীয় নথি (আধার কার্ড, রেশন কার্ড ইত্যাদি) তৈরি করে দিতেও সাহায্য করত লালু। সম্প্রতি কলকাতার হরিদেবপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া জেএমবি জঙ্গিরাও লালুর সূত্র ধরে এ দেশে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের জেরা করেই লালুর সন্ধান মিলেছে বলে এসটিএফ সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.