Advertisement
E-Paper

online games: মোবাইল গেমে মজে কারা, গ্রামে ঘুরে খোঁজ নিচ্ছে স্কুল

স্কুল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, নিয়মিত ধরপাকড় ও অভিভাবকদের জানানোর ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১২
পদক্ষেপ: ছাত্রদের খোঁজ নিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন শিক্ষকেরা।

পদক্ষেপ: ছাত্রদের খোঁজ নিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন শিক্ষকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

স্মার্টফোন হাতে পেয়ে গেমে নজর আটকে, নাকি পড়াশোনায় কাজে লাগছে ফোন— এ নিয়ে খোঁজ-খবর করতে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন শিক্ষকেরা।

বাগদার কোনিয়াড়া যাদবচন্দ্র হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা গত কয়েকদিন ধরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বাইকে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন। ছাত্রছাত্রীদের বাড়ির বাইরে মোবাইলে গেম খেলতে দেখলে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। অভিভাবকদের জানাচ্ছেন বিষয়টি। স্কুলে কবে, কখন অনলাইন ক্লাস তা-ও জানানো হচ্ছে পড়ুয়ার বাবা-মাকে। ওই সময় ছাড়া ছেলেমেয়েদের হাতে স্মার্টফোন না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

স্কুল সূত্রের খবর, পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৮৬০ জন ছাত্রছাত্রী আছে এই স্কুলে। শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৩ জন। করোনা পরিস্থিতিতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে অনলাইন ক্লাস চলছে। অনেকেই ছেলেমেয়েদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিয়েছেন। কিন্তু কিছু পড়ুয়া হাতে ফোন পেয়ে অনলাইন গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে পড়েছে বলে খবর পাচ্ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনকী, অনলাইন ক্লাস না করে তারা বন্ধুদের সঙ্গে একজোট হয়ে গেম খেলে সময় কাটাচ্ছিল বলেও জানতে পারেন তাঁরা।

প্রধান শিক্ষক অনুপম সর্দার জানান, স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়া গরিব পরিবার থেকে আসে। ৭০ শতাংশ পড়ুয়ার স্মার্টফোনই নেই। সম্প্রতি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নজরে আসে, স্মার্টফোন যাদের আছে, তাদের মধ্যে অনেক পড়ুয়াই আবার অনলাইন ক্লাস করছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই পড়ুয়াদের অনেকে ক্লাসের সময়ে মোবাইলে গেম খেলতে ব্যস্ত।’’

স্কুল সিদ্ধান্ত নেয়, ওই পড়ুয়াদের হাতেনাতে ধরা হবে। সেই মতো শিক্ষক-শিক্ষিকারা আলাদা আলাদা দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামে গ্রামে যাওয়া শুরু করেন। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে গোবিন্দপুর গ্রামে প্রধান শিক্ষক-সহ কয়েকজন শিক্ষক যান। তাঁদের নজরে আসে, এলাকায় একটি বাওরের পাশে বসে অষ্টম ও নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়া মোবাইলে গেম খেলছে। সে সময়ে তাদের অনলাইন ক্লাস করার কথা। ধরা পড়ে তারা জানায়, অনলাইন ক্লাসের কথা তারা জানতই না।

ওই পড়ুয়াদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিভাবকদের জানানো হয়। তাঁরাও জানতেন না ছেলেরা গেম খেলতে ব্যস্ত থাকে। দুর্গাপুর গ্রাম থেকেও বেশ কিছু পড়ুয়া ক্লাসের সময়ে গেম খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছে বলে জানাল স্কুল।

স্কুল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, নিয়মিত ধরপাকড় ও অভিভাবকদের জানানোর ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের উপরে নজর রাখতে শুরু করেছেন। স্কুলের পক্ষ থেকে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংও করা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, অভিভাবকদের অনেকেই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে সচেতন নন। তাঁদের স্মার্টফোন সম্পর্কে বিশেষ ধারণাও নেই। সেই সুযোগটা নিচ্ছে কিছু পড়ুয়া।

এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘আমি স্মার্টফোন সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না। ছেলে ঘাঁটাঘাঁটি করে। আমরা ভাবতাম, স্কুলের ক্লাস করছে। শিক্ষকেরা বলার পরে সচেতন হয়েছি।’’ এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘করোনার জন্য খেলাধুলো, ঘোরাঘুরি সবই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই সময় কাটাতে গেম খেলি।’’ তবে এ অভ্যাস যে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, সে কথা মানছে নবম শ্রেণির ওই পডুয়াও। শিক্ষকদের সে কথা দিয়েছে, পড়াশোনার সময় ছাড়া মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করবে না।

স্কুলের যে সব পড়ুয়ার স্মার্টফোন নেই, তাদের জন্য কী করা হচ্ছে?

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘এই ছেলেমেয়েদের অ্যাকটিভিটি টাস্ক দেওয়া হয়। যাদের স্মার্টফোন আছে, তাদের বলা হয় ওদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করে নিতে। এত কিছুর পরেও অবশ্য একটা বড় অংশের পড়ুয়া অসুবিধার মধ্যে রয়েছে।’’ অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে বাইরের রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছে বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক। দ্রুত স্কুল না খুললে স্কুলছুটের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তাঁর আশঙ্কা।

Online Class Online game
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy