Advertisement
E-Paper

নাচের ছন্দে ভরসা পায় থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ছোট্ট তনুশ্রী

মঞ্চে বসে জেলা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। তাদের সামনে জনপ্রিয় বাংলা গানের ছন্দে নাচছে এক বালিকা। দর্শকদের থেকে ভেসে আসছে একের পর এক অনুরোধ। মিলছে টাকা।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
মঞ্চে স্বচ্ছন্দ। নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে স্বচ্ছন্দ। নিজস্ব চিত্র।

মঞ্চে বসে জেলা এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। তাদের সামনে জনপ্রিয় বাংলা গানের ছন্দে নাচছে এক বালিকা। দর্শকদের থেকে ভেসে আসছে একের পর এক অনুরোধ। মিলছে টাকা। হঠাৎ ছন্দপতন। অসুস্থ হয়ে মঞ্চের মধ্যেই বসে পড়ল সে। অনুষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকেরা মেয়েটিকে ধরাধরি করে ভেতরে নিয়ে গেলেন।

মেয়েটির নাম তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়। ক্যানিঙের দ্বারিকানাথ হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী জন্মের ছ’মাস পর থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। তার দিদি দশম শ্রেণির ছাত্রী মধুশ্রী ছোট থেকেই নাচে পারদর্শী। দিদিকে দেখেই নাচ শেখার বায়না শুরু করেছিল তনুশ্রী। কিন্তু শারীরিক সমস্যার জন্য প্রথমে রাজি হননি তনুশ্রীর বাবা-মা। কিন্তু নাছোড় মেয়ের আবদার বেশি দিন ফেলে রাখতে পারেননি। তনুশ্রীকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়। তালিম নেওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই এলাকার অনুষ্ঠানে নিজের প্রতিভা প্রদর্শন করে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এই বালিকা। পেয়েছে অনেক পুরস্কার। কিন্তু শারীরিক সমস্যার জন্য মাঝে মধ্যেই মঞ্চে অসুস্থ হয়ে যায় তনুশ্রী। তবু সে মঞ্চে উঠবেই। না হলেই তার মন খারাপ।

তনুশ্রীর বাবা স্বপন চট্টোপাধ্যায় একটি স্কুলের অস্থায়ী নিরাপত্তা কর্মী। রোজগার সামান্য। মা রূপা চট্টোপাধ্যায় গৃহবধূ। কোনও রকমে সংসার চলে। রূপাদেবী জানান, প্রতি মাসে দু’বার করে তনুশ্রীর শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা দিতে হয়। নিয়মিত খেতে হয় ওষুধ। রক্তের কার্ড থাকলেও অনেক সময়ে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় রক্ত মেলে না। তখন রক্ত কিনতে হয়। স্বপনবাবু জানান, ‘‘চিকিৎসকেরা মেয়ের অস্ত্রোপচার করাতে বলছেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের টাকা জোগাড় করব কী করে? ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ায় মেয়ে দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। ওকে নাচতে অনেক বার বারণ করেছি। কিন্তু নাচতে না পেলে ও আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।’’

তনুশ্রীর কথা জানেন ক্যানিঙের মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘তনুশ্রীর পরিবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ও যাতে সরকারি সাহায্য পায়, সে জন্য ওই চিকিৎসা-সংক্রান্ত নথি জেলা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়েছি।’’

Saraswati Puja Thalassemia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy