বিদ্যুৎ, জল সবই এসে গিয়েছে। দুই, তিন এবং চার শয্যার ঘরের ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু সেগুলি ব্যবহার করার কেউ নেই। মার্বেলে মোড়ানো মেঝে, ঝাঁ চকচকে দোতলা আকাশি-নীল বাড়িটি এ ভাবেই আবাসিক শূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় দু’বছর ধরে। পড়ে থেকে থেকে দেওয়ালের রঙে কালো ছোপ পড়তে শুরু করেছে। মখমলের মতো সবুজ ঘাসেও জংলা গাছ গজিয়ে উঠছে।
পূজালি পুরসভা তৈরি করেছিল এই বৃদ্ধাশ্রম। পঞ্চাশ জন আবাসিক থাকতে পারার মতো আয়তনের এটি। পুর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ছিল, বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা করবে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দরপত্রের মাধ্যমে পনেরো বছরের চুক্তিতে সংস্থা নির্বাচন করা হবে। পরিবর্তে নির্বাচিত সংস্থাটি কয়েক দফায় পুরসভাকে খরচের দেড় কোটি টাকা দিয়ে দেবে। সমস্যা হয়েছে সেখানেই। পূজালি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, ‘‘চার বার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কেউ তাতে সামিলই হতে উৎসাহ দেখাননি। পূজালি পুরসভার পক্ষে বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা করাও অসম্ভব। অত লোকবল নেই পুরসভার।’’ তবে কী ভেবে বৃদ্ধাশ্রম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল? ফজলুলবাবুর দাবি, ‘‘ছোট পুরসভা। তাই আয়ের বিভিন্ন পথ তৈরি করতে গিয়ে এটিতে হাত দেওয়া হয়েছিল।’’
গঙ্গার কাছাকাছি এই বৃদ্ধাশ্রমটি তৈরি করার সময়ে এমন পরিস্থিতির কথা কল্পনাও করতে পারেননি পূজালি পুর কর্তৃপক্ষ। এমনটাই দাবি তাঁদের। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং পূজালি পুরসভার নিজস্ব তহবিলের অর্থে এই বৃদ্ধাশ্রমটি তৈরি করা হয়েছিল। প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রম। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর জুন-জুলাই থেকে এ বছর মে পর্যন্ত পুর বোর্ড ছিল না। প্রশাসনের অধীন ছিল পুর এলাকা। ফলে কোনও কাজ করা যায়নি। ওই সময়ের আগেই চার বার দরপত্রের আহ্বান করা হয়েছিল।