বনগাঁয় কচুরিপানা ও আগাছায় ঢাকা ইছামতী নদী সংস্কারের দাবি উঠেছে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
গাইঘাটার বেড়ি গোপালপুর এলাকায় ২৬ মার্চ থেকে ইছামতী নদী সংস্কারের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রের ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ় অথরিটি অফ ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ (আইডব্লুআই)। কাজের সূচনা করেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রের বন্দর জাহাজ ও জলপথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। নদী সংস্কারের এই কাজ নিয়ে শান্তনুর বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলল তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, “আমাদের অভিযোগ, নদী সংস্কারের কাজে স্বচ্ছতার অভাব আছে। এ কাজে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তা ওই এলাকায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিতে হবে। কোনও কাজ শুরু হলে সেই কাজে বরাদ্দ কত, কাজের আরও নানা তথ্য জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, সামনের বছর লোকসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে নদী সংস্কারের নামে মানুষকে ভাঁওতা দিচ্ছেন শান্তনু।
দীর্ঘ দিন ধরে নদীটি সংস্কারের অভাবে মৃতপ্রায়। বনগাঁ মহকুমার মানুষের পূর্ণাঙ্গ নদী সংস্কারের দাবি অনেক দিনের। আইডব্লুআই সূত্রে জানানো হয়েছে, এই পর্যায়ে গাইঘাটার কালাঞ্চি থেকে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ২৩.৮১ কিলোমিটার নদীপথের সংস্কার করা হবে। প্রথমে নদী থেকে কচুরিপানা তোলা হবে। তারপরে নদীর গভীরতা মাপজোক করে ড্রেজিং করে পলি তোলা হবে।
তৃণমূলের অভিযোগের বিষয়ে শান্তনু বলেন, “তৃণমূলের নেতারা না জেনে মূর্খের মতো কথা বলছেন। কেন্দ্র সরকার ইছামতী নদী সংস্কার করছে। রাজ্য সরকারের এখানে কোনও ভূমিকাই নেই। আমরা বাধ্য নই নদী সংস্কারে কত টাকা খরচ হচ্ছে তা রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে জানাতে। ঘটনাস্থলে সাইনবোর্ড লাগানো আছে। যথা সময়ে সেখানে খরচ-সহ প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য লিখে দেওয়া হবে।”
নদীর বাকি অংশের সংস্কার প্রসঙ্গে শান্তনু জানান, কালাঞ্চির পর থেকে নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশ ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী-সীমান্তে পড়ে। ওই অংশের সংস্কার করতে বাংলাদেশ সরকারের সবুজ সঙ্কেত প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে। আশা করি, তাঁদের ছাড়পত্র মিলবে। রাজ্য সরকার নদীর ওই অংশ-সহ নদিয়ার পাবাখালিতে নদীর উৎসমুখ পর্যন্ত আইডব্লুআইয়ের অন্তর্ভুক্ত করে দিক। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, পুরো নদীর সংস্কার করে দেব।”
ইছামতী নদীর উপরে বেড়ি গোপালপুর ও তরণীপুরের মধ্যে বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি, একটি কংক্রিটের সেতু তৈরি হোক। ২৬ মার্চ শান্তনু বলেছিলেন, সেতু করতে হলে জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। রাজ্য সরকারকে আইডব্লুআই কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আবেদন করেছে। জমি পাওয়া গেলে সেতু করে দেওয়া হবে। এ দিন বিশ্বজিৎ বলেন, “সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণ করার আবেদন করে রাজ্য সরকারকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি। চিঠি দেখাতে বলুন।” শান্তনুর জবাব, “চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না, তা সঠিক সময়ে প্রকাশ্যে আনা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy