Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ট্র্যাফিক আইন ভেঙে মিলল পুরস্কার

নিজেরা চাঁদা তুলে হেলমেট কিনে রবিবার এভাবেই মন্দিরবাজার সংলগ্ন এলাকায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভে’র প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশের এই পদক্ষেপ ঘিরে দেখা দিয়েছে বিতর্ক।

ডায়মন্ড হারবারে। নিজস্ব চিত্র

ডায়মন্ড হারবারে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২০
Share: Save:

সকাল সাড়ে ১০টা মোটরবাইকে চড়ে ডায়মন্ড হারবারের দিকে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। রাস্তায় মন্দিরবাজার বাসস্ট্যান্ডে তাঁদের আটকায় পুলিশ। জানাতে চাওয়া হল, মাথায় হেলমেট নেই কেন? কাঁচুমাচু মুখে বাইকচালকের সাফাই— ‘‘কেস দেবেন না স্যার। তাড়াহুড়োয় হেলমেট পরতে ভুলে গিয়েছি। এমন আর হবে না।’’

কেস তো দেওয়া হলই না! উল্টে এর পরে পুলিশ অফিসার যা করলেন তাতে হতভম্ব ট্র্যাফিক আইন ভাঙা ওই দম্পতি। হাসিমুখে এসে ওই পুলিশকর্মী তাঁদের দু’জনের মাথায় পরিয়ে দিলেন আনকোরা দু’টি হেলমেট!

শুধু এই দম্পতিই নয়, আইন ভেঙে যাঁরাই এদিন মন্দিরবাজার সংলগ্ন এলাকায় গিয়েছেন, তাঁদেরই কপালে জুটেছে এ হেন ‘পুরস্কার’। তা নিয়ে দিব্যি হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন অন্তত ৬০জন বাইকচালক। আর যাঁরা এদিন আইন ভাঙেননি, তাঁদের কপালে জুটেছে লব়ডঙ্কা। তাঁদেরই একজন বলেন, ‘‘আমি আইন মেনে হেলমেট পরে গিয়ে দেখলাম, সবাই হাজারখানেক টাকা দামের হেলমেট বিনা পয়সায় পাচ্ছেন। আইন না মানলে তো আমিও পেতাম! কী কুক্ষণেই যে হেলমেট পরতে গিয়েছিলাম।’’

নিজেরা চাঁদা তুলে হেলমেট কিনে রবিবার এভাবেই মন্দিরবাজার সংলগ্ন এলাকায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভে’র প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশের এই পদক্ষেপ ঘিরে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, আইনভঙ্গকারীদের নিজেদের তহবিল থেকে হেলমেট বিতরণ কেন? আর আইনভঙ্গকারীদের ছাড়ই বা দেওয়া হচ্ছে কেন?

মন্দিরবাজার থানার ওসি বাপি রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের পরিকল্পনা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ। তা বাস্তবায়িত করতেই পথে নামা। সারাদিন ধরে বিভিন্ন মোড়ে প্রচার চালানোর সময় অন্তত ৬০জন আরোহীকে হেলমেট পরানো হয়েছে।’’

কিন্তু নিজেরাই কেন হেলমেট কিনেছেন? ওই টাকায় দুঃস্থ পড়ুয়াদেরও তো সাহায্য করা যেত। বা কেনা যেত ফুটবল। জবাবে পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মানুষের কাছে পৌঁছতেই প্রচেষ্টা। তাঁর বক্তব্য, বিভিন্ন পুজো, উৎসবে পুলিশ দুঃস্থ পড়ুয়াদের সাহায্য করে। স্কুলে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

আর আইনভঙ্গকারীদের ছাড় দেওয়া প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য, সকলেরই নাম নথিভুক্ত করা হয়ছে। পরবর্তী সময়ে তাঁরা নিয়মভঙ্গ করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। বাপিবাবুর কথায়, ‘‘প্রত্যেককে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, মোটরবাইক চালানোর সময় হেলমেট পরলে দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণে বাঁচা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE