উদ্ধার: সেই সব কচ্ছপ
ফি সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে নদিয়ার চাকদহে কালীবাজার মণ্ডলহাটে।
প্রতি মঙ্গল আর শুক্রবার। সেই হাটেই ফল-আনাজ, মাছ-মাংসের সঙ্গে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ। বন দফতর কার্যত অন্ধকারে। চাকদহ ব্লকের ঘেঁটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের এই হাটে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন আসেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই বেশ সচ্ছল। ফলে ৫০০ টাকা কেজি কচ্ছপের মাংস কেনার খরিদ্দারের অভাব হয় না। কচ্ছপ আসছে কোথা থেকে? শুক্রবার মণ্ডলহাটে কচ্ছপ বিক্রি করতে আসা কারবারি নিজেই জানান, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে তিনি কচ্ছপ কিনে আনেন। কখনও কোনও বাধার মুখে পড়তে হয়নি। বিক্রিবাটা ভালই হয়। তবে প্রতি হাটবারেই যে তিনি কচ্ছপ নিয়ে বসেন, তা নয়। বনগাঁয় কচ্ছপের আনাগোনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। প্রতি শীতেই বনগাঁ মহকুমার বেশির ভাগ ছোট-বড় বাজারে প্রকাশ্যে বা গোপনে কচ্ছপ বিক্রি হয়। এ বারও হচ্ছে। কচ্ছপ কেনা বেআইনি জেনেও সাধারণ মানুষ বাজারে ভিড় করছেন। দিন কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বনকর্তারা গাইঘাটার পাঁচপোতা বাজার থেকে চার কারবারিকে গ্রেফতার করেছিলেন। তাদের কাছ থেকে ১০০টি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। তার পরেও অবশ্য কারবারিদের মধ্যে কোনও হেলদোল নেই। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মূলত গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকে শীতের সময়ে কচ্ছপ আসে। ট্রাক ও ম্যাটাডরের মধ্যে থাকে মাছের ট্রে। তার মধ্যে মাছ রাখা হয়। মাছের নীচে থাকে কচ্ছপ। ফলে চট করে কচ্ছপ দেখা যায় না। নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া পুলিশ, সিআইডি বা বন দফতরের কর্তারা তল্লাশি চালাতে পারে না। চাঁদপাড়া, ঠাকুরনগর, পাঁচপোতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় তা মজুত করা হয়। পরে তা নদিয়া ও বাংলাদেশে চলে যায়।
পুলিশ ও সিআইডি অতীতেও বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে কচ্ছপ পাচার চক্রের খোঁজ পেয়েছে। কচ্ছপের বাদিও পাচার হয় সীমান্ত দিয়ে। এর আগে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে সিআইডি আন্তর্জাতিক এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল।
নদিয়ার রানাঘাট বন দফতরে আধিকারিক প্রদীপ বাগচি বলেন, “এ ভাবে কচ্ছপ বিক্রি করা যায় না। এটা আইনবিরুদ্ধ কাজ। অবিলম্বে বাজারে অভিযান চালানো হবে।” পুলিশও জানিয়েছে, কচ্ছপ বিক্রেতাদের ধরতে হানা দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy