Advertisement
E-Paper

পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে  সীমান্ত পেরিয়েও অপরাধ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ অক্টোবর বনগাঁ শহরে মহকুমা হাসপাতাল-সংলগ্ন এলাকা থেকে এক মহিলার টাকা-ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালায় দুই দুষ্কৃতী।

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৯:১৪
বনগাঁয় ধৃত দুই বাংলাদেশিকে আদালতে তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

বনগাঁয় ধৃত দুই বাংলাদেশিকে আদালতে তোলা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

লক্ষাধিক টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে বনগাঁ থানার পুলিশ দুই বাংলাদেশি ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করল। বুধবার তাদের পেট্রাপোল থানার ধানকলমোড় এলাকা থেকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ বালায়েত কাজি এবং মিরাজুল শেখ। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে। মাসখানেক আগে তারা এ দেশে এসে পেট্রাপোল থানা এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। পাসপোর্ট-ভিসা নিয়েই এ দেশে এসেছিল তারা। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ অক্টোবর বনগাঁ শহরে মহকুমা হাসপাতাল-সংলগ্ন এলাকা থেকে এক মহিলার টাকা-ভর্তি ব্যাগ নিয়ে পালায় দুই দুষ্কৃতী। গাইঘাটার আঙুলকাটা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা তাঁর বাবার সঙ্গে বনগাঁয় এসেছিলেন। মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি এক আত্মীয়কে দেখতে যাচ্ছিলেন। মহিলার সঙ্গে একটি হাতব্যাগ ছিল। তাতে দেড় লক্ষ টাকা ছিল।

অভিযোগ, বাটারমোড় এলাকা থেকে হেঁটে বাবা-মেয়ে হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। দু’জন ব্যক্তি তাদের পিছু নেয়। হাসপাতালের কাছে একটি রাস্তায় মেয়েটি ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে জল খাচ্ছিলেন।

অভিযোগ, সে সময়ে দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন মহিলার ব্যাগ কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, তারাও বাংলাদেশি। পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে এ দেশে ঢুকেছিল তারা।

বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে বৈধ ভাবে এ দেশে এসে অপরাধমূলক কাজে বা পাচারের কাজে যুক্ত হওয়া নতুন নয়। দিন কয়েক আগে গোপালনগর থানার পুলিশ আন্তর্জাতিক মোবাইল পাচার চক্রের হদিস পেয়েছিল। চক্রের পান্ডা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ৭২টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার হয়।

ধৃতদের মধ্যে একজন ছিল বাংলাদেশি। তার নাম আনোয়ার হোসেন। বাড়ি বাংলাদেশের যশোরে। পুলিশ জানিয়েছে, আনোয়ার চোরাপথে নয়, রীতিমতো পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে বৈধ ভাবেই এ দেশে আসত। গোপালনগর থেকে চোরাই মোবাইল বাংলাদেশে নিয়ে যেত সে।

কয়েক বছর আগে তিন বাংলাদেশি দুষ্কৃতীকে বনগাঁ থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। অভিযোগ, তারা নাম ভাঁড়িয়ে এ দেশে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে ধরে। বাংলাদেশে তাদের বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা।

বনগাঁ মহকুমার সীমান্ত এলাকায় এসে কারা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন, সে সম্পর্কে পুলিশ, পুরসভা বা পঞ্চায়েতের কাছে কোনও নথি থাকে না বলে অভিযোগ। বাড়ির মালিক পর্যন্ত পুলিশের কাছে ভাড়াটিয়া সম্পর্কে কোনও তথ্য সচরাচর জানান না। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে গা ঢাকা দিয়ে থাকে।

কয়েক বছর আগে বনগাঁ থানার পুলিশ স্থানীয় চড়ুইগাছি এলাকার একটি খাল থেকে মর্কেচুর রহমান নান্নু নামে এক বাংলাদেশি দুষ্কৃতীর দেহ উদ্ধার করেছিল। খুন হওয়ার বছর দেড়েক আগে চোরাপথে নান্নু এ দেশে ঢুকেছিল। স্থানীয় বোয়ালদহ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। পরবর্তী সময়ে এলাকায় জমি কিনে বাড়িও তৈরি করছিল।

সে ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল, পুলিশ বা পঞ্চায়েতের কাছে ভাড়াটে হিসেবে নান্নু সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না। ওই ঘটনার পরে অবশ্য পুলিশ ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজে গতি এনেছিল। থানায় ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। বাড়ির মালিকদের দিয়ে ভাড়াটিয়াদের পরিচয়-সংক্রান্ত নির্দিষ্ট আবেদনপত্র পূরণ করে রাখা হত।

এখন সে সব লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ। বাড়ির মালিকদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা আসেনি বলে পুলিশ কর্তারা মনে করেন। অনেক সময়ে বাড়ির মালিক পুলিশকে তথ্য জানান না। পুলিশের তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিয়মিত ভাড়াটিয়া সম্পর্কে তথ্য রাখার কাজ করা সম্ভব হয় না।

বনগাঁর পুলিশ সুপার জয়িতা বসু বলেন, ‘‘সীমান্ত এলাকায় কেউ বাড়ি ভাড়া দিলে, তাঁদের কাছে আবেদন করা হচ্ছে, ভাড়াটিয়া সম্পর্কে তথ্য থানায় জানিয়ে রাখুন। আমরাও সীমান্তে ভাড়াটিয়াদের উপরে নজর রাখছি।’’

arrest Bangaon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy