অণিমা মণ্ডল
এ বার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল অশোকনগর থানা এলাকায়। মৃতার নাম অণিমা মণ্ডল (৩৩)। বাড়ি অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাগপাড়ায়। শনিবার ভোরে বারাসতের একটি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে দত্তপুকুর থানার জয়পুল এলাকার বাসিন্দা সাহিরা পারভিনও (২৬) জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন। বারাসত জেলা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে অবশ্য ডেঙ্গির উল্লেখ নেই।
অণিমাদেবীর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে। এত দিন অশোকনগর থানা এলাকায় জ্বরে ভুগে মৃত্যু ঘটলেও সরকারি ভাবে ডেঙ্গি মানা হয়নি। অণিমাদেবীকে ধরে অশোকনগর থানা এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে অণিমাদেবী জ্বরে পড়েন। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজিটিভ পাওয়া যায়। অবস্থার অবনতি হলে বারাসত জেলা হাসপাতাল, পরে সেখানে থেকে নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অণিমাদেবীকে।
অভিযোগ, সেখানে তাঁর ঠিক মতো চিকিৎসা হচ্ছিল না। পরিবারের লোকজন ১ নভেম্বর বারাসতের নার্সিংহোমে ভর্তি করেন অণিমাদেবীকে। সেখানেই শনিবার সকালে মারা যান তিনি।
স্বামী কৃষ্ণকান্তবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। মেয়ে অনামিকা শ্রীচৈতন্য কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছেলে কৈলাস অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। অণিমাদেবীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে পরিবার। অনামিকা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে মায়ের পেটে জল জমে গিয়েছিল। যন্ত্রণা হতো। চিকিৎসকদের বলা হলেও তাঁরা গুরুত্ব দিলেন না।’’ কৃষ্ণকান্তবাবুর আত্মীয়-পরিজনের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা পেলে এ ভাবে মরতে হতো না। কৃষ্ণকান্তবাবু বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে ঠিক মতো চিকিৎসা হয়নি। তাই নার্সিংহোমে ভর্তি করলাম। তা-ও বাঁচাতে পারলাম না স্ত্রীকে। পরিবারটা ভেসে গেল। কী ভাবে ছেলেমেয়েকে মানুষ করব, জানি না।’’
অনামিকা জানালেন, পাড়ার একটু ভিতরের দিকে তাঁদের বাড়ি। মশার উপদ্রব রয়েছে। পুরসভার থেকে এলাকায় মশা মারা হলেও তাঁদের বাড়ির দিকে আসেনি কেউ।
এলাকাবাসীর দাবি, পুরসভা এলাকায় কম-বেশি মশা মারার কাজ হলেও পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে নমো নমো করে মশা মারা হচ্ছে। তেল সব এলাকায় ছড়ানো হচ্ছে না। মশা উপদ্রব কমার লক্ষণ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy