Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাঁচিল ভেঙে পড়ল গায়ে, মৃত্যু ২ জনের

এলাকায় যান তৃণমূলের একাধিক নেতা। তাঁদের মধ্যে ধর্মপাল সিংহ বলেন, ‘‘কারখানার মালিকদের শাস্তি দাবি করছি। মৃত পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা করে এবং জখমদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানাব সরকারের কাছে।’’

 ধ্বংসস্তূপ: ভেঙে পড়া ইট সরানো হচ্ছে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ধ্বংসস্তূপ: ভেঙে পড়া ইট সরানো হচ্ছে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কাঁকিনাড়া শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:১৮
Share: Save:

সাতসকালে রাস্তার ধারের দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলেন কয়েক জন। আচমকাই তাঁদের গায়ে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল পাশের বন্ধ কারখানার পাঁচিল। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। জখম হয়েছেন আরও ৩ জন। সোমবার কাঁকিনাড়ার ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। একই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জগদ্দল থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন নুর আলম শেখ (৩১) এবং অজিত সাউ (৩৭)। নুর কলকাতার একবালপুর রোড়ের বাসিন্দা। অজিতের বাড়ি ভাটপাড়ার রায়বাগানে। জখম হয়েছেন মজিদ মোল্লা ওরফে রামবিলাস, মুন্না যাদব এবং প্রদ্যুনর সিংহ। মজিদের বাড়ি নৈহাটি গৌরীপুর উত্তরপাড়ায়। মুন্না ভাটপাড়ার গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা। অন্য জন থাকেন কাঁকিনাড়ায়। সকলেই কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টিটাগড়ে পেপার মিলের একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে কাঁকিনাড়ার আর্যসমাজ মোড়ে। টিটাগড় পেপার মিল দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধ। ওয়ার্কশপটিও তাই। মেরামতির অভাবে কারখানার পাঁচিল দীর্ঘ দিন ধরেই অশক্ত। বছর কয়েক আগে ওই পাঁচিলটি একবার মেরামত হলেও পুরো অংশে কাজ হয়নি। ফলে বেশ নড়বড়ে ছিল সেটি।

আর্যসমাজ মোড়ে রোজ ভোরে প্রচুর ট্রাক এসে দাঁড়ায়। পণ্য খালাস করে সেগুলি আবার চলে যায়। সে জন্য ওই মোড়ে ভোর থেকেই শ্রমিকদের ভিড় জমে। এ দিন এলপিজি সিলিন্ডারের ট্রাক নিয়ে এসেছিলেন চালক নুর আলম। পাঁচিল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল আরও কয়েকটি ট্রাক। সেখান থেকে মাল নামানোর কাজ চলছিল। চায়ের দোকানটিও ছিল ওই পাঁচিলের গায়েই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আচমকাই উঁচু পাঁচিল হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে দোকানের উপরে। ধাক্কায় একটি ট্রাকও উল্টে যায়। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নুর আলমের। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ট্রাক সরিয়ে ভাঙা পাঁচিলের নীচে আটকে পড়া চার জখমকে উদ্ধার করে। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সকলকেই কল্যাণীর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুরে সেখানেই মৃত্যু হয় অজিতের। অজিতের বাড়ির লোকজন কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পরে এলাকায় যান বিজেপির বিধায়ক পবন সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘ওই পাঁচিলটির অবস্থা দীর্ঘ দিন ধরেই খারাপ। আমার বাবা (সাংসদ অর্জুন সিংহ) এলাকার পুরপ্রধান থাকার সময়ে কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলে কিছুটা মেরামতি করিয়েছিলেন। কিন্তু তখন পুরোটা হয়নি। তার ফলেই দু’জনের প্রাণ গেল। আমরা মৃত এবং জখমদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’’

এলাকায় যান তৃণমূলের একাধিক নেতা। তাঁদের মধ্যে ধর্মপাল সিংহ বলেন, ‘‘কারখানার মালিকদের শাস্তি দাবি করছি। মৃত পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা করে এবং জখমদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানাব সরকারের কাছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wall Collapsed Death Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE