Advertisement
E-Paper

মাটিতে পড়ে দুই ছেলে, ঘরে ঝুলছে মায়ের দেহ

ঘরের আড়া থেকে ঝুলছে তাদের মায়ের দেহ। মঙ্গলবার সকালে মিনাখাঁর পূর্ব চৈতলের কানমারি পাড়ায় এই দৃশ্য চোখে পড়ে পাড়া-পড়শির। পুলিশ আসে। মা ও দুই ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫২

ছোট দু’টো বাচ্চা মাটিতে পড়ে। মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। ঘরের আড়া থেকে ঝুলছে তাদের মায়ের দেহ। মঙ্গলবার সকালে মিনাখাঁর পূর্ব চৈতলের কানমারি পাড়ায় এই দৃশ্য চোখে পড়ে পাড়া-পড়শির। পুলিশ আসে। মা ও দুই ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, দেহে প্রাণ নেই মনিকা সর্দার (২৩) ও তাঁর দুই ছেলে কিসান (৫), কিরণের (৪)।
অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ তিনটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে। মনিকার স্বামী কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বছর সাতেক আগে বসিরহাটের ঘোড়ারাস গ্রামের মনিকার সঙ্গে বিয়ে হয় কিশোরের। কিশোরের বাবা ও দুই ভাই কেরলে থাকেন। মা উড়পতি এবং স্ত্রী- দুই সন্তানকে নিয়ে কানমারিতে থাকতেন কিশোর। সপ্তাহখানেক পরে তাঁদেরও কেরলে যাওয়ার কথা ছিল।
এ দিন বেলা ৯টা নাগাদ কিশোর কাজে বেরিয়ে যান। উড়পতি বেরিয়েছিলেন ব্যাঙ্কে। পুলিশ জানায়, বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ গ্রামের একজন কিশোরকে ডাকতে তাঁর বাড়িতে যান। ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ না মেলায় সন্দেহ হয় ওই ব্যক্তির। তিনি জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন, মনিকার দেহ ঝুলছে। ছেলেরা মাটিতে পড়ে। তিনি খবর দেন পাড়া-পড়শিদের। খবর যায় থানায়। পুলিশ আসে। খবর পেয়ে চলে আসেন উড়পতিও। দরজা খুলে তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। গ্রামের মানুষজন পুলিশকে জানিয়েছেন, তেমন কোনও কাজ করেন না কিশোর। এই নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, সাংসারিক অশান্তির জেরে এ দিন স্বামী-শাশুড়ি বেরিয়ে যেতেই দুই ছেলের গলায় কীটনাশক ঢেলে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মনিকা। কিশোরও তাই মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাজের খোঁজে বেরিয়েছিলাম। এ সব নিয়েই ঝগড়া হয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গে। তারই জেরে শেষ ছেলে দু’টোকে মেরে ও আত্মহত্যা করেছে।’’ মনিকার বাবা সন্তোষ সর্দার আবার দাবি করেছেন, কিছু দিন আগে সেলাই মেশিন কেনার জন্য জামাই ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল। মেয়ের কাছে সে কথা শুনেও টাকা জোগাড় করতে পারেননি বাবা। ওই ঘটনার সঙ্গে মৃত্যুর কোনও যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে কিনা, তা-ও জানা যাবে।

Crime Corruption Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy