Advertisement
০২ মে ২০২৪

ধুলো-ধোঁয়া মিশে তৈরি হচ্ছে খাবার

যশোর রোডের ধারে কোনও রকমে একটি ছাউনি দেওয়া দোকান। দু’টি বড় হাঁড়ি থেকে প্যাকেটে ভরে দেওয়া হচ্ছে বিরিয়ানি। পাশ থেকে নানা ধরনের ছোট বড় গাড়ি যাচ্ছে। খাবারের সঙ্গে ধোঁয়া-ধুলো মিশে একাকার।

খোলা-জায়গা: বনগাঁয় ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক।

খোলা-জায়গা: বনগাঁয় ছবি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক।

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

দৃশ্য ১: যশোর রোডের ধারে কোনও রকমে একটি ছাউনি দেওয়া দোকান। দু’টি বড় হাঁড়ি থেকে প্যাকেটে ভরে দেওয়া হচ্ছে বিরিয়ানি। পাশ থেকে নানা ধরনের ছোট বড় গাড়ি যাচ্ছে। খাবারের সঙ্গে ধোঁয়া-ধুলো মিশে একাকার।

দৃশ্য ২: বনগাঁ-চাকদহ সড়কের পাশে একটি হোটেল। রান্না হচ্ছে নানা রকমের তরকারি ও রুটি। সেখানেও এই একই চিত্র।

দৃশ্য ৩: রাস্তার ধারে বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের ঠান্ডা পানীয়, আখের রস। কিছু বরফের টুকরো রাস্তায় পড়ে গেল, সেগুলিকেই তুলে মিশিয়ে দেওয়া হল পানীয়তে। এমনকী আখগুলি রাখা হয়েছে রাস্তায়।

শুধু তাই নয়, যে থালা বাটিগুলি এই দোকানগুলিতে খাবারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। মানুষের খাবার পর তা শুধু একবার কোনও রকমে এমনি জল দিয়েই ধোয়া হচ্ছে। অবাধে বিক্রি হচ্ছে কাটা ফলও।

এই খাবারগুলি খেয়েই নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মানুষকে এই সমস্ত খাবার খেতে নিষেধ করলেও তাঁরা শুনছেন না বলে দাবি চিকিৎসকদের। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ধুলো বালির সঙ্গে নানারকম জীবাণু মিশছে খাবারে। তা থেকেই বাড়ছে রোগ। তা ছাড়া অপরিষ্কার জায়গায় খাবারগুলি তৈরি করা হচ্ছে, যা অস্বাস্থ্যকরও বটে।’’

কিন্তু শহরের বেশির ভাগ লোকজনই এখন ফুটপাথের ‘ফাস্ট ফুড’ খেতেই অভ্যস্ত। কলেজ ফেরত তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়ারা রাস্তার দোকানের খাবার খেতেই ভালবাসে। আর বাড়িতে রুটি করার প্রবণতা তো চলে গিয়েছে বললেই চলে। বেশির ভাগ বাড়িতেই এখন কেনা রুটিতে রাতের খাবার পর্ব সারেন গিন্নিরা।

পুরসভা থেকে এই দোকানগুলির কোনও অনুমোদনও নেই। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘রাস্তার পাশে যাঁরা খাবার বিক্রি করেন, তাঁদের পুরসভা লাইসেন্স দেয় না। মাঝে-মধ্যেই খাবারের দোকানের অভিযান চালানো হয়। এ বার থেকে ঘন ঘন অভিযান চালানো হবে।’’

বনগাঁ পুরসভার পক্ষ থেকে সম্প্রতি শহরের হোটেল, রেস্তোঁরা ও খাবারের দোকানের মালিক নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও অবস্থায় রঙ মেশানো খাবার বিক্রি করা যাবে না। খোলা জায়গায় খাবার রাখা যাবে না। বাসি, পচা খাবার বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে।

সড়কের পাশের এক হোটেলের মালিক জানান, কাচ দিয়ে ঘিরে খাবার রাখাটাই উচিত। কিন্তু তাঁদের পক্ষে এত টাকা খরচ করে কাচের বাক্স করা সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food unhygienic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE