এক জন মহিলা অফিসার বনগাঁ মহিলা থানায়

মহিলাদের উপরে ঘটা অপরাধের অভিযোগ জানানোর জন্য ২০১৬ সালে তৈরি করা হয়েছিল বনগাঁ মহিলা থানা। মহিলাদের সুরক্ষা বাড়বে বলে মনে করেছিলেন স্থানীয় মানুষ। অপরাধের দ্রুত নিস্পত্তি হবে বলেও আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু অভিযোগ, বনগাঁ মহিলা থানা এখনও মানুষের তেমন ভরসার জায়গা হয়ে উঠতে পারেনি। বরং অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে মহিলা থানার থেকে সাধারণ থানার উপরেই এখনও বেশি ভরসা মহিলাদের।

মহিলা থানার পরিকাঠামো নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। থানার নিজস্ব ভবন থাকলেও পুলিশ কর্মীর সংখ্যা খুবই কম। বর্তমানে ওসি (অফিসার ইন চার্জ) থেকে আইসি (ইন্সপেক্টর ইন চার্জ) দায়িত্বপ্রাপ্ত থানায় উত্তীর্ণ হয়েছে বনগাঁ মহিলা থানা। দায়িত্বে রয়েছেন মহিলা আইসি। কিন্তু তিনি ছাড়া থানায় আর কোনও মহিলা অফিসারই নেই! এক জন মহিলা সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন, তিনি সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে দু’জন পুরুষ অফিসার রয়েছেন। আর রয়েছেন ছ’জন মহিলা কনস্টেবল। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মহিলারা সমস্যা জানাতে এলে পুরুষ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে অনেকে ইতস্তত করেন। মহিলা থানায় মহিলা অফিসার খুবই প্রয়োজন। মহিলা কনস্টেবলও প্রয়োজনের তুলনায় কম এখানে।

এই লোকবল নিয়ে অপরাধের তদন্ত করা, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা, আদালতে তোলা, চার্জশিট তৈরির মতো কাজগুলি কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময়েই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে সাধারণ থানার পুলিশের সাহায্য নিতে হয় মহিলা থানার পুলিশকে।

মহিলা থানায় লকআপ থাকলেও পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা লকআপ নেই। ধৃত মহিলাদের আইসির ঘরে রাখা হয়। তবে কোনও গুরুত্বপূর্ণ মামলার অভিযুক্ত ধরা পড়লে অনেক সময়ে তাদের বনগাঁ থানার লকআপে রাখা হয় নিরাপত্তার কারণে। সম্প্রতি বনগাঁ মহিলা থানার আইসি পথ দুর্ঘটনায় জখম হন। তাঁর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেটি এখনও সারিয়ে আনা হয়নি। মহিলা পুলিশ কনস্টেবলরা পুলিশ ব্যারাকে থাকলেও অফিসারদের থাকার জন্য কোনও ব্যবস্থা থানায় নেই। তাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সরকার অবশ্য বাড়ি ভাড়ার টাকা দিয়ে দেয়।

চলতি বছরে বনগাঁ মহিলা থানায় ৫১টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। তার তদন্ত হয়েছে। অপরাধী গ্রেফতার হওয়ার মতো হলে করা হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বনগাঁ মহিলা থানায় পুলিশ কর্মীর সংখ্যাকম থাকার কথা সাধারণ মানুষ জানেন। সে কারণে অনেকে আসেন না। পুলিশ কর্মী বাড়ানোর প্রয়োজনের কথা স্বীকার করলেও জেলা পুলিশ কর্তারা এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চাননি।