গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। সোমবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বীজপুরের ইটখোলা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সানি বাসফোঁড় (২৫)। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে অন্যের বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়ে হল্লা করার জেরে চোর সন্দেহে তাঁকে মারধর করে ওই বাড়ির লোকজন। এরপর স্থানীয় কয়েকজন যুবক সানিকে বাতি স্তম্ভে বেঁধে নাম পরিচয় জানতে চায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অতিমাত্রায় নেশা করার ফলে কার্যত বেহুঁশ হয়েই ছিল ওই যুবক। সে কারণে ঠিকমতো উত্তর না দেওয়ায় তাঁকে লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নৃশংস ভাবে খোঁচানোও হয়। এরপর আধমরা করে হালিশহর ও কাঁচরাপাড়ার মাঝে চেনগেটের কাছে রেল লাইনের ধারে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে। সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদেরই কয়েকজন সানিকে কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তে নেমে ওই এলাকা থেকে সনোজ প্রসাদ, ভীম সাউ, অর্জুন সাউ, রাজীব কুমার এবং আনন্দকুমার গুপ্তা নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সানির বাড়ি জগদ্দলের সাধু ঘাট প্রমোদ নগরে। তিনি সাফাই কর্মীর কাজ করতেন। দু’বছরের একটি ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী চন্দা বলেন, “এ দিন দুপুরে ডাঙাপাড়ায় আমার এক ননদের দেওরের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল ও। ইটখোলায় আমার আরও এক ননদ থাকেন। ওখানে গিয়েই ঘর চিনতে ভুল হওয়ায় অন্য ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়েছিলেন। সকালে আমরা খবর পেলাম তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।”
পিটিয়ে খুনের ঘটনা শিল্পাঞ্চলে নতুন নয়। কিন্তু নৃশংস ভাবে মারার পর রেল লাইনের ধারে ফেলে আসার ঘটনায় বীজপুরের অমানবিক মুখটা স্পষ্ট হল। অভিযুক্তরাও নেশা করেছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নিহতের বিরুদ্ধে এর আগে কোনও অপরাধের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”