ফের খুনের ঘটনা জগদ্দলে।
গত তিন মাসে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের জগদ্দলেই খুনের ঘটনা ৮টি। তার মধ্যে নতুন সংযোজন বুধবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, অনিল সাহা (২৬) নামে যে যুবক খুন হয়েছেন, তিনি রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। বাড়ি জগদ্দলের স্থিরপাড়া এলাকায়। বুধবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। নিয়মিত নেশা করার অভ্যাস থাকায় মাঝে মধ্যে রাতে বাড়ি ফিরতেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন অনিলের পরিবারের লোকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে স্থিরপাড়ার ছাতিমতলায় একটি মাঠের ধারে ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর মাথায় ধারাল অস্ত্রের আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নেশা করে জুয়ার ঠেকে বসার পরে কোনও বচসার জেরেই খুন করা হয়েছে অনিলকে। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, স্থানীয় ও বহিরাগত কিছু লোক মাঝে মধ্যে এলাকায় ফাঁকা জায়গায়, গাছতলায় জুয়ার ঠেক বসায়। নেশাও করে। বুধবার রাতেও সে রকমই কোনও ঠেকে অনিল বসেছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান। তবে এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী সাধ্য মতো কাজ করছি। তদন্ত হচ্ছে। বহু ঘটনায় অপরাধীদের ধরাও হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে। নইলে সব অপরাধ দমন করা মুশকিল।’’
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অন্যতম অপরাধপ্রবণ থানা জগদ্দল। এলাকা হিসাবেও অনেক বড়। এমনিতেই কমিশনারেট হওয়ার পর ব্যারাকপুর কার্যত মাথা ভারি প্রশাসন। অফিসারদের সংখ্যা বেশি থাকলেও নিচু তলায় থানার পিসি (প্লেন ক্লোদ) পার্টি, যাঁরা কিনা থানার গোয়েন্দা বাহিনী হিসাবে চিহ্নিত বা তদন্তকারী অফিসারের সংখ্যা বাড়েনি। ফলে ঢক্কানিনাদই সার হয়েছে। গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়েই অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। কোথাও শাসক দলের চাপে আবার কোথাও পুলিশের ঘাটতির জন্য বহু তদন্ত এগোয়নি বলে অভিযোগ। এত বড় একটা থানায় পাঁচ মাস হয়ে গেল আইসি নেই। আগের আইসিকে সাসপেন্ড করার পরে নতুন আইসি নিয়োগ হয়নি। কখনও নৈহাটি থানার আইসি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কখনও নোয়াপাড়ার আইসি। এ ভাবে জোড়াতালি দিয়ে থানা চালানোর জেরে অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে বলে অভিমত পুলিশের একাংশের। কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘প্রশাসনিক কাজকর্মের ক্ষেত্রে যে দিকগুলিতে নজর দেওয়া উচিত, সেগুলিতে ঠিক মতো নজর দেওয়া হচ্ছে না বলেই সমস্যা বাড়ছে।’’
শুধু তাই নয়, আগে থানার কনস্টেবল থেকে পুলিশের শীর্ষ কর্তা পর্যন্ত যে ভাবে নিয়মিত জনসংযোগের কাজ করতেন, সেই প্রক্রিয়াও এখন কার্যত বন্ধ। যার জেরে পুলিশের খবরের সূত্রগুলিও হারিয়ে যাচ্ছে বলে কর্মীদেরই একাংশের ক্ষোভ আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy