Advertisement
E-Paper

যুবককে খুনে ধৃত স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামীকে খুন করেছেন ওই মহিলা। ধৃতদের আরও জেরা করার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৬
সুজিত মণ্ডল, ধৃত শম্পা মণ্ডল এবং ধৃত নয়ন পাল। —নিজস্ব চিত্র।

সুজিত মণ্ডল, ধৃত শম্পা মণ্ডল এবং ধৃত নয়ন পাল। —নিজস্ব চিত্র।

আলুর চপে মিশিয়ে প্রথমে খাওয়ানো হয়েছিল ‘ঘুমের ওষুধ’। তার পরে নাবালক ছেলে-মেয়ের চোখের সামনে বালিশ চাপা দিয়ে এবং গলা টিপে স্বামী সুজিত মণ্ডলকে (৩৮) খুনের অভিযোগ উঠল স্ত্রী শম্পা মণ্ডল এবং তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বিজয়নগর গ্রামের ঘটনা। নিহতের বাবার করা অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকেই ধরেছে পুলিশ। শুক্রবার কাটোয়া আদালত ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য পুলিশ-হেফাজতে পাঠিয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে স্বামীকে খুন করেছেন ওই মহিলা। ধৃতদের আরও জেরা করার জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’

সুজিত কাটোয়ার পানুহাটের একটি মিষ্টির দোকানের কর্মী। প্রায় ১৫ বছর আগে মঙ্গলকোটের বাসিন্দা শম্পার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির একটি ১৪ বছরের ছেলে এবং ন’বছরের মেয়ে আছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, ছেলে-মেয়েকে পড়ানোর সূত্রে বছর তিরিশের শম্পার সঙ্গে মাস ছয়েক আগে ‘ঘনিষ্ঠতা’ গড়ে ওঠে বিজয়নগরেরই বাসিন্দা বছর উনত্রিশের যুবক নয়ন পালের। রাতে সুজিতের বাড়িতে যাতায়াত ছিল নয়নের। পুলিশ সূত্রের খবর, সুজিতের ছেলের কাছ থেকে তারা জেনেছে, অনেক রাতেই তাদের ঘুমের ওষুধ দিতেন শম্পা। তদন্তকারীদের অনুমান, ‘সম্পর্ক’ লুকোতেই ওই কৌশল নেওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সকালে বিজয়নগর গ্রামের বাড়ির বিছানায় সুজিতের মৃতদেহ মেলে। অভিযোগ, শম্পা সে সময় ঘুমের মধ্যেই স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন। কিন্তু মৃতদেহের গলায় কিছু দাগ দেখে সন্দেহের বশে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কাটোয়া হাসপাতালে। ইতিমধ্যে দম্পতির বাচ্চারা আত্মীয়দের কাছে দাবি করে, শম্পা এবং নয়নকে সুজিতের মুখে বালিশ চাপা দিতে দেখেছে তারা। নিহতের বাবা জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডল অভিযোগ করেন পুলিশে। রাতেই ধরা হয় শম্পা-নয়নকে।

জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, বাচ্চাদের কাছ থেকে তাঁরা জেনেছেন, বুধবার রাতে আলুর চপ দিয়ে ভাত খেতে চেয়েছিলেন সুজিত। পুলিশের সন্দেহ, সেই চপের মধ্যে একাধিক ঘুমের ওযুধ মিশিয়ে দেন শম্পা। আলাদা করে ঘুমের ওষুধ দেন ছেলে-মেয়েকেও। বৃহস্পতিবার ভোরে শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে দুই নাবালকের। পুলিশের দাবি, সুজিতের ছেলে তাদের জানিয়েছে, সেই সময় সুজিতের মুখে বালিশ চাপা দিয়েছিলেন শম্পা এবং নয়ন। পরে গলাও টিপে ধরেন। সে সময় ভাই-বোনকে প্রাণে বাঁচতে হলে চুপ করে থাকার হুমকি দেওয়া হয়। এ দিন নিহতের ছেলের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। বিচারক ভাই-বোনকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালতে নয়নের আইনজীবী মণ্ডল আজিজুল দাবি করেন, ‘‘সুজিত প্রায়ই কাজ থেকে ফিরে শম্পাকে মারধর করতেন। প্রতিবাদ করায় নয়নের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ যদিও সুজিতের বাবা জ্যোতিষবাবুর দাবি, ‘‘নয়নের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি করায় শম্পা আমাকে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে। তবে সেই সম্পর্কের জন্য ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে, ভাবিনি।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy