Advertisement
০২ মে ২০২৪

চিড়িয়াখানা থেকে বনপ্রকৃতিতে ঠাঁই পাচ্ছে চার পান্ডা

তারা বনের প্রাণী। কিন্তু এখনও বন দেখেনি। জন্ম চিড়িয়াখানার অন্দরে। বেড়ে ওঠা সেখানেই। তবে এ বার ওরা খোলা প্রকৃতিতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। দিন গুনছে তারই অপেক্ষায়।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৯
Share: Save:

তারা বনের প্রাণী। কিন্তু এখনও বন দেখেনি। জন্ম চিড়িয়াখানার অন্দরে। বেড়ে ওঠা সেখানেই। তবে এ বার ওরা খোলা প্রকৃতিতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। দিন গুনছে তারই অপেক্ষায়।

ওরা মানে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার লাল পান্ডা। রাজ্য জু অথরিটি বা রাজ্য চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষের খবর, আগামী এপ্রিলের শেষশেষি চারটি লাল পান্ডাকে সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। চিড়িয়াখানার ঘেরাটোপে জন্মানো লাল পান্ডাকে এ ভাবে এর আগে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।

রাজ্য চিড়িয়াখানা-কর্তৃপক্ষের সদস্য-সচিব বিনোদ যাদব জানান, সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে গৈরিবাসের কাছে একটি বড় এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। তার ভিতরেই রেডিও-কলার পরিয়ে প্রাথমিক ভাবে চারটি পান্ডাকে ছাড়া হবে। সেখানে অনুকূল পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। ওই ঘেরাটোপে অন্তত ছ’মাস থাকার পরে স্বাভাবিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিলে ওদের ছাড়া হবে আরও বড় এলাকায়।

বন দফতরের খবর, আবদ্ধ এলাকায় জন্মানো পান্ডারা প্রকৃতিতে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারছে কি না, পারলে কী ভাবে খাওয়াচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে— তার উপরে নজর রাখতেই রেডিও-কলার পরানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি ওই এলাকায় বনকর্মীরাও নজরদারি চালাবেন। পান্ডাদের জঙ্গলে ছাড়ার কথা চলছে কিছু দিন ধরেই। প্রকৃতির কাছে তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সম্প্রতি সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই বনাঞ্চল লাল পান্ডাদের স্বাভাবিক বাসভূমি।

যাদব জানান, অরণ্যে বংশবৃদ্ধির জন্য দু’টি মদ্দা এবং দু’টি মাদি পান্ডাকে নিয়ে দু’টি আলাদা জোড়া করা হবে। দম্পতির যাতে জিন-চরিত্র এক না-হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই জন্য চিড়িয়াখানার পান্ডাদের জিন-চরিত্র বিশ্লেষণ করছেন কল্যাণীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার) এবং হায়দরাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি (সিসিএমবি)-র গবেষকেরা। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই জোড়া বাছাই হবে।

বন দফতরের খবর, গৈরিবাস ছাড়াও ভবিষ্যতে সিঙ্গালিলা এবং নেওড়াভ্যালিতে ফের পান্ডা ছাড়া হবে। জিন-মানচিত্র তৈরি থাকলে নতুন জোড়া বাছতে সমস্যা হবে না। সিঙ্গালিলা ও নেওড়া উদ্যানে পান্ডার বাসস্থান নিয়ে সমীক্ষা করছে বন দফতরের ‘জিআইএস’ শাখা।

জু অথরিটি সূত্রের খবর, পান্ডারা বিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণী। ১৯৯০ সালে দার্জিলিঙের চিড়িয়াখানায় বসন্ত নামে একটি মদ্দা এবং অমিতা, চন্দা ও দিব্যা নামে তিনটি মাদি পান্ডাকে নিয়ে শুরু হয় সংরক্ষণের কাজ। ১৯৯৪ সালে বসন্ত ও অমিতার দুই

শাবক ‘একতা’ এবং ‘ফ্রেন্ড’ ভূমিষ্ঠ হয়। পান্ডা পরিবারে জিন-বৈচিত্র বৃদ্ধির জন্য পরে আরও কয়েকটি পান্ডা নিয়ে আসা হয় বিদেশ থেকে। ওই চিড়িয়াখানার রেড পান্ডা ভিন্‌ রাজ্য এবং ভিন্‌ দেশের চিড়িয়াখানাতেও পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling Red Panda Singalila
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE