Advertisement
E-Paper

চলতি বছরেই সাত ঘূর্ণিঝড়, দায়ী উষ্ণায়ন?

রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ইন্টার্ন-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দু’ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪
‘গজ’-এর তাণ্ডব। ফাইল চিত্র।

‘গজ’-এর তাণ্ডব। ফাইল চিত্র।

আবার নিম্নচাপ। এবং তা থেকেই বঙ্গোপসাগরে আবার তৈরি হতে চলেছে একটি ঘূর্ণিঝ়়ড়। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে দানা বাঁধা গভীর নিম্নচাপটি আজ, শুক্রবারের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। তার পরে সে ছুটে যাবে অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে। চলতি বছরে এই নিয়ে উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকা (আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর যার অন্তর্ভুক্ত) সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে যাচ্ছে। এক বছরে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির ঘটনা বিরল।

মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, গত চার দশকের মধ্যে ১৯৮৫ সালে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর মিলিয়ে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যে জোরালো ঘূর্ণিঝড় ছিল মাত্র দু’টি। এ বার ইতিমধ্যে তৈরি হওয়া ছ’টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে চারটিই প্রবল বা অতিপ্রবল গোত্রের। গত এক দশকে কোনও বার ছ’টি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়নি। এখন যে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে, তার জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন পরিবেশবিদ ও আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ইন্টার্ন-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল, বিশ্বের গড় তাপমাত্রা দু’ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে। তারা সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। উত্তর ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় পরপর ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি সেই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফল বলে মনে করছে তারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সুগত হাজরা বলেন, ‘‘বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে তাপমাত্রার বদলের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় তৈরির নিবি়ড় সম্পর্ক আছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন এই দু’টি প্রাকৃতিক প্রবণতাকে প্রভাবিত করে। এ বছর তার মধ্যে এল নিনো (প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি) পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বিএড বইয়ে বিদ্ধ যাদবপুর, বিতর্ক তুঙ্গে

পরিবেশবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগে সাতটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও তাদের প্রাবল্য সে-ভাবে ছিল না। কিন্তু ইদানীং ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার প্রাবল্যও বাড়ছে। ২০১৩ সালে এক বছরে পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। তার চারটিই ছিল প্রবল বা অতিপ্রবল। এ বারেও চারটি প্রবল ও অতিপ্রবল গোত্রের ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে। আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল হবে কি না, সেই বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্যে যেতে নারাজ মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হওয়ার পরে তার হালহকিকত আরও নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব। এই শক্তি বৃদ্ধির পিছনেও বিশ্ব উষ্ণায়নকে দায়ী করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, সাগরজলের উষ্ণতা বাড়লে তা ঘূর্ণিঝড়কে জলীয় বাষ্প জুগিয়ে শক্তির জোগান দেয়। ‘‘বিশ্ব উষ্ণায়নে শুধু ঘূর্ণিঝ়়ড়ের সংখ্যাই বাড়বে না, তার শক্তিও বাড়বে বলে জানানো হয়েছিল। সেটাইক্রমশ প্রমাণিত হচ্ছে,’’ বলেন সুগতবাবু।

আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ার থেকে জঙ্গি, সামিরের সাজা কাল

Cyclone Global Warming Mausam Bhaban
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy