Advertisement
E-Paper

বালিঘাটের দখল নিয়ে সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণে লাভপুরে মৃত আট

বালিঘাটের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে দু’দল সমাজবিরোধীর লড়াইয়ে ফের রক্তাক্ত হল বীরভূমের লাভপুর। দরবারপুর গ্রামে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল আট জনের। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ দরবারপুরের বাগদিপাড়ায় ওই বিস্ফোরণ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ১৯:৪৪
হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

বালিঘাটের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে দু’দল সমাজবিরোধীর লড়াইয়ে ফের রক্তাক্ত হল বীরভূমের লাভপুর। দরবারপুর গ্রামে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল আট জনের। শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ দরবারপুরের বাগদিপাড়ায় ওই বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনাতে জড়িয়ে গিয়েছে শাসকদলের নাম। পুলিশ জানায়, ওই বিস্ফোরণে আনোয়ার শেখ (৪২), রমজান শেখ (৪৫), আদু শেখ (৪৮), লালসাদ শেখ (৪৬), হাজিবুর শেখ (৪০), কালো শেখ (৩৫), আসাদুল শেখ (৩৭) এবং জামিরুল শেখ (৪৫)-র মৃত্যু হয়েছে।

বালিঘাট নিয়ে এই এলাকায় মারপিট, বোমাবাজি নতুন নয়। খুন-জখমও লেগেই থাকে। তা বলে বিস্ফোরণে এত সংখ্যক মৃত্যু সাম্প্রতিক কালে দেখেনি লাভপুর। দিন কয়েক আগেই দ্বারকা পঞ্চায়েতের এই দরবারপুর থেকেই তিন ড্রাম ভর্তি শতাধিক তাজা বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। মাসখানেক আগে বালির ঘাটের দখল নিয়ে এই পঞ্চায়েতেরই সাওগ্রামে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দলের নেতা লখরিদ শেখকে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা।

এ দিন কী হয়েছে?

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, ময়ূরাক্ষী নদীর বালিঘাটের দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতা, দরবারপুরের শোয়েব আলি এবং মীরবাঁধের আহাদুর শেখের দলবলের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই বিরোধ চলছিল। এ দিন তা চরমে পৌঁছয়। সকাল থেকেই দু’পক্ষের বোমাবাজি শুরু হয়। পুলিশ জেনেছে, তারই প্রস্তুতি হিসেবে দরবারপুর গ্রামের মীনারুল শেখের বাড়ির পিছনে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। সে সময়েই আচমকা বিস্ফোরণ হয় বলে পুলিশের অনুমান। শোয়েব, আহাদুর দু’জনেই নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করেছে। বিস্ফোরণের দায়ও পরস্পরের উপরে চাপিয়েছে।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মীনারুল শেখের বাড়ির পিছনের দেওয়ালে বিস্ফোরণের ছাপ স্পষ্ট। পড়ে রয়েছে সুতুলির বাণ্ডিল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দেহাংশ। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঝলছে গিয়েছে গাছের পাতা। ভেঙে পড়েছে জানলার পাল্লা। গোটা গ্রাম কার্যত পুরুষ শূন্য। তারই মধ্যে মৃত লালসাদের স্ত্রী মীনা বিবি এবং আনোয়ারের স্ত্রী কেবিরা বিবির বলেন, ‘‘ভাঙাচোরা লোহা কেনাবেচা করে সংসার চলে। এ দিন কাজ সেরে মীনারুলের বাড়ির পিছনে বসে গল্প করছিল ওঁরা। তখনই মীরবাঁধের লোকেরা বোমা ছোড়ে।’’

আরও পড়ুন: সর্বসম্মতিতে চেয়ারপার্সন মমতা, সম্মেলনে না এসে জল্পনা বাড়ালেন শুভেন্দু

ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, সিপিএমের দুষ্কৃতীরাই এলাকা অশান্ত করতে বোমা ছুড়েছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পল্টু কোঁড়া অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ওই গ্রামে তো দলের সংগঠনই নেই। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বকে আড়াল করতেই এই দোষারোপ!’’

বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জেনেছি এটা দু’টি দুষ্কৃতী দলের লড়াই। তারই প্রস্তুতি হিসেবে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। হঠাৎ বোমা ফেটে দুর্ঘটনাটি ঘটে।’’

Birbhum Blast TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy