বাংলাদেশে অশান্তির আঁচ পড়ল শান্তিনিকেতনেও। ভিসা সমস্যার জেরে বাংলাদেশে নিজের বাড়িতে যাওয়া বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা ফিরতে পারছেন না। আবার, পৌষমেলার ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার কথা ভেবেও বাংলাদেশ যেতে পারছেন না একাধিক পড়ুয়া। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা চাই, বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক।’’
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে উত্তাল বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসা ছড়িয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে ভারতের উপদূতাবাসের সামনেও। বাংলাদেশের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের (আইভ্যাক) ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে থাকা পাঁচটি কেন্দ্র— চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা থেকে গুরুত্ব বিচার করে সীমিত সংখ্যায় ভিসা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এমনই চলবে বলে খবর।
এই পরিস্থিতিতে, সমস্যায় পড়েছেন বিশ্বভারতীর বাংলাদেশি পড়ুয়ারা। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, সঙ্গীত ভবন, কলাভবন-সহ বেশ কিছু ভবন মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রায় ৪০-৫০ জন পড়ুয়া রয়েছেন। তাঁরা কেউ হস্টেলে, কেউ বাড়ি ভাড়া নিয়ে এখানে থাকেন। তাঁরা অনেকেই ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু এখন তাঁদের ভিসা গ্রাহ্য হচ্ছে না।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, স্নাতকোত্তরের ডিগ্রি কোর্সে ১০-১২ জন পড়ুয়া রয়েছেন, যাঁরা এখন বাংলাদেশে নিজেদের বাড়িতে আছেন। তাঁদের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শান্তিনিকেতনে ফেরার কথা। এমনই এক জন, সঙ্গীত ভবনের অমৃতা সরকার বলেন, ‘‘কয়েক দিনের ছুটিতে বাড়ি এসেছিলাম। এখন ঢাকায় আছি। জানুয়ারি থেকে স্নাতকোত্তরের ডিগ্রি কোর্সের ক্লাস শুরু। ভিসার জন্য আবেদন করেছি, কিন্তু এখনও তা গ্রাহ্য হয়নি। কী ভাবে এখন শান্তিনিকেতনে ফিরব, বুঝতে পারছি না।’’
শান্তিনিকেতন থেকে বাংলাদেশে যেতে চেয়েও তা পারছেন না অনেকে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বললেন, ‘‘পৌষ মেলার ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। কিছু কাজও ছিল। কিন্তু ভিসা মিলছে না। চরম সমস্যায় পড়েছি।’’ বাংলাদেশ থেকে আসা স্নাতকোত্তরের আর এক পড়ুয়া রকি সরকার বললেন, ‘‘দেশের যা অবস্থা, চিন্তায় রয়েছি। কবে সব কিছু স্বাভাবিক হবে, কেউ জানে না। আমরা চাই, দ্রুত দেশে শান্তি ফিরুক।’’
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের পড়ুয়ারা ওখানে গিয়ে আটকে পড়েছেন, তাঁরা যাতে ঠিক ভাবে ফিরে আসতে পারেন, সে ব্যবস্থা করুক বাংলাদেশের প্রশাসন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)