সইফুদ্দিন লস্কর। — ফাইল চিত্র।
জয়নগরের তৃণমুল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর খুনে ব্যবহার করা হয়েছিল দলুয়াখাকির এক যুবকের বাইক। তাঁর নাম মফিজুল লস্কর। সোমবার, খুনের দিনেই বাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। তৃণমূল নেতা খুনের পর থেকে পলাতক মফিজুল। তাঁর সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। অভিযোগ, দলুয়াখাকির লস্কর পাড়ার বহু বাসিন্দাই ঘটনার পর থেকে পলাতক।
সইফুদ্দিন খুনের পর দলুয়াখাকিতে সিপিএম সমর্থকদের ঘরে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। তাতে আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন বহু জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন বাম সমর্থককে বুধবার ঘরে ফেরানো হয়েছে। ঘরছাড়ার পর তাঁদের দক্ষিণ বারাসত পার্টি অফিসে রাখা হয়। অভিযোগ, ওই বাম সমর্থকদের বাড়ির সমস্ত জিনিস লুট করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে বাড়িঘরও। মঙ্গলবার বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক লাহিড়ীরা ওই ঘরছাড়াদের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন। সেই সব জিনিসপত্র নিয়েই তাঁরা বুধবার বাড়ি ফেরেন। তাঁদের বাড়ি ফেরাতে দক্ষিণ বারাসত পার্টি অফিসে আসেন কান্তি এবং আরএসপি নেতা সুভাষ নস্কর। যদিও তাঁরা এর পর গ্রামে যাননি।
স্থানীয় নেতৃত্ব ঘরছাড়াদের নিয়ে দলুয়াখাকিতে গেলে তাঁদের ঢুকতে বুধবারও বাধা দেয় পুলিশ। শুধু মাত্র বাসিন্দারাই ঘরে ফেরেন। মোট আটটি পরিবার বুধবার বাড়ি ফিরেছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে মহিলা সমিতির কয়েক জন কর্মী ছিলেন। বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক কাটছে না ঘরছাড়াদের। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অশান্তি এড়াতে ২৪ ঘণ্টাই পুলিশি পাহারা থাকবে এলাকায়। বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস জানান, গ্রামে বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
সোমবার নমাজ পড়তে যাওয়ার পথে খুন হল তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। অভিযোগ, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা সাহাবুদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারে। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের পর বুধবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এর পর গ্রেফতার হন শরিফুল, যিনি সইফুদ্দিনের বাড়ির পাশে বাড়িভাড়া নিয়ে তাঁর উপর নজর রাখতেন। সিসি ক্যামেরায় খুনের যে ফুটেজ ধরা পড়েছে, তাতে পাঁচ জনকে দেখা গিয়েছে। তবে আরও বেশ কয়েক জন এই কাণ্ডে জড়িত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই অভিযুক্তেরা সকলেই পলাতক। তাঁদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। অভিযুক্তদের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এ দিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে এসইউসিআই-এর পক্ষ থেকে একটি ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। অবিলম্বে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে এবং হামলার ঘটনায় যে সব গরিব মানুষের সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে, সরকারকে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে জানান এসইউসিআই নেত্রী সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy