জয়নগরের নিহত তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
জয়নগরের ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর খুনের জট ক্রমশ পাকাচ্ছে। তৃ়ণমূল নেতা খুনের অভিযোগে ধৃত শাহারুল শেখের বয়ানে উঠে এসেছে নাসিরের নাম। শাহরুলের দাবি, সইফুদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন এই নাসিরই। মঙ্গলবার পর্যন্ত নাসিরের সম্পর্কে বিশেষ তথ্য ছিল না পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশের সূত্রে বুধবার পাওয়া খবর অনুযায়ী, শাহরুল বয়ানে জানিয়েছেন যে, নাসিরের বাড়ি মন্দিরবাজার থানার টেকপাঁজা গ্রামে। পুরো নাম নাসির হালদার। কলকাতায় পুরনো জিনিসপত্র কেনা-বেচার কাজ করতেন তিনি। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে নাসিরের পরিবার। তাঁর পরিবারের দাবি, নাসিরকে ইচ্ছা করে ফাঁসানোর জন্যই তাঁর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। জয়নগরের ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই বলেও নাসির হালদারের পরিবারের দাবি। যদিও জয়নগরের তৃণমূল নেতা খুনের পর থেকেই নাসিরের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সোমবার সকালে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মসজিদ যাবেন বলে। নমাজ পড়তে যাওয়ার পথেই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয়। এর পর থেকে অশান্ত হয়ে উঠেছে জয়নগর। তৃণমূল নেতা খুনের পরে সাহাবুদ্দিন নামে এক অভিযুক্তকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। অন্য দিকে, সইফুদ্দিন খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শাহরুল নামের এক যুবক।
শাহরুলের মুখেই নাসিরের কথা প্রথম জানতে পারেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার বারুইপুর আদালত থেকে বেরোনোর সময়ও শাহরুলের মুখে নাসিরের নাম শোনা যায়। মঙ্গলবার আদালত থেকে বেরোনোর সময় শাহরুল বলেন, ‘‘নাসির খুন করার অর্ডার দিয়েছিলেন।’’ কে সেই নাসির? শাহরুল শুধু বলেন, ‘‘বড়ভাই।’’ কার ‘বড়ভাই’, তা অবশ্য জানাননি তিনি। শাহরুল বার বার দাবি করেন, ‘‘আমি গুলি চালাইনি। চালিয়েছে সাহাবুদ্দিন।’’ তবে সইফুদ্দিন খুনের সঙ্গে জড়িত এই তৃতীয় চরিত্র নাসির কে? তা তখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট ছিল না।
তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, সইফুদ্দিন খুনের মূল মাথা এই নাসিরই। নাসির-সহ বাকি অভিযুক্তদের নাকি একাধিক বার ফৌজদারি মামলায় ফাঁসিয়ে ছিলেন জয়নগরের ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন। মাঝেমধ্যে ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হত। আর সেই সময় থেকেই সইফুদ্দিনের উপর চাপা রাগ ছিল নাসিরদের। সেই বদলার মনোভাব থেকেই সইফুদ্দিন খুন হয়েছেন বলে সূত্রের খবর। নাসিরকে খুঁজে বার করতে ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy