হাসপাতালে সাহারাজ। ছবি: সমরেশ মণ্ডল
খেলতে গিয়ে হাত ভেঙেছে কিশোরের। এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এক হাতে ব্যান্ডেজ, অন্য হাতে স্যালাইনের চ্যানেল।
এই অবস্থাতেও উচ্চ মাধ্যমিক দেবে বলে মনস্থ করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের কাশীনগর হাই স্কুলের পরীক্ষার্থী সাহারাজ জমাদার। শুক্রবার শুরু হয়েছে পরীক্ষা। বুধবার ‘রাইটার’ (পরীক্ষার্থীর হয়ে লিখে দেন যিনি) চেয়ে স্কুলে আবেদন করেন তাঁর বাবা ইদ্রিস। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, এত অল্প সময়ে ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে এ বছর পরীক্ষা দিতে পারল না ছেলেটি।
গোটা ঘটনা শুনে বিস্মিত কাকদ্বীপ মহকুমা সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সিদ্ধার্থ হালদার। তিনি বলেন, ‘‘কেউ রাইটারের আবেদন করলে তা খতিয়ে দেখে সোজাসুজি প্রধান শিক্ষকেরা কাউন্সিলে যোগাযোগ করে অনুমতি নিতে পারেন। এক দিন হাতে সময় পেয়েও কেন কাউন্সিলে যোগাযোগ করলেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ, তা খতিয়ে দেখা হবে। এমনটা হওয়ার কথা নয়।’’
কী বলছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুবিমল মাইতি? তাঁর যুক্তি, ‘‘১৪ তারিখ ওঁরা রাইটারের আবেদন করতে এসেছিলেন। কিন্তু এত কম সময়ে রাইটার পাওয়া সম্ভব নয়।’’ শেষ মুহূর্তে আবেদন করা হলেও স্কুল কি আদৌ চেষ্টা করেছিল রাইটার পেতে? নিরুত্তর সুবিমল।
পরিবার সূত্রের খবর, গত রবিবার ফুটবল খেলতে গিয়ে সাহারাজের বাঁ হাত ভাঙে। কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হলে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। বুধবার চিকিৎসার নথিপত্র দিয়ে রাইটার চেয়ে স্কুলে আবেদন করেন তাঁরা। ইদ্রিসের দাবি, ‘‘প্রধান শিক্ষক বললেন, হাতে মাত্র দু’দিন। রাইটার পাওয়া মুশকিল। অনুমতিও পাওয়া যাবে না। ছেলে যেন সুস্থ হয়ে পরের বছর পরীক্ষা দেয়।’’ ইদ্রিসের কথায়, ‘‘ওঁর পরামর্শ শুনে আকাশ থেকে পড়ি!’’ সাহারাজের আফসোস, ‘‘রাইটার পেলে পরীক্ষা দিতে পারতাম। কিন্তু বছরটা নষ্ট হল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy