E-Paper

চাষ-জমিতে ভেড়ি, চাওয়া হল রিপোর্ট

নারায়ণ মান্না-সহ কয়েক জন ব্যক্তি কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে সবংয়ের বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাপ দিয়ে চাষের জমি দখল করে সেখানে মাছের ভেড়ি তৈরি করার অভিযোগ জানান।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ০৫:০৭
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালি কাণ্ডে চাষের জমি দখল করে মাছের ভেড়ি বানানোর কথা সামনে এসেছিল। তা নিয়ে যথেষ্ট তোলপাড় হয়েছিল। এ বার একই কথা সামনে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ে। সেখানেও চাষের জমি দখল করে মাছের ভেড়ি তৈরি নিয়ে মামলা হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় চাষের জমিতে ভেড়ি তৈরি করার কথা কার্যত মেনেও নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি ওই মামলায় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, এই জমি দখল করে ভেড়ি তৈরি এবং জমির চরিত্র বদল নিয়ে জেলা প্রশাসন কী পদক্ষেপ করেছে তা কোর্টে রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে। আগামী ৮ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি।

নারায়ণ মান্না-সহ কয়েক জন ব্যক্তি কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে সবংয়ের বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাপ দিয়ে চাষের জমি দখল করে সেখানে মাছের ভেড়ি তৈরি করার অভিযোগ জানান। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুতীর্থ নায়েকের অভিযোগ ছিল, প্রথমে মাছ চাষের টোপ দিয়ে জমি লিজ়ে নিয়ে ভেড়ি করা হয়েছে। তারপর সেই ভেড়ির নোনা জল ক্রমশ আশপাশের জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে মাটির উর্বরতা নষ্ট করে সেই জমিগুলিকেও দখল করে ভেড়ি তৈরি করা হয়েছে। এই মামলায় আদালতের বিভিন্ন নির্দেশকেও কার্যত উপেক্ষা করা হয়েছে। এই অভিযোগ শোনার পরে এপ্রিল মাসে আদালত পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে এই ভেড়ি তৈরি এবং জমির চরিত্র বদল বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিল।

আদালতের খবর, সম্প্রতি জেলাশাসক কোর্টে যে রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতে প্রকারান্তরে ভেড়ি তৈরির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। প্রশাসনের খবর, আদালতের নির্দেশের পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জেলা, মহকুমা এবং ব্লক স্তরের একাধিক অফিসারকে নিয়ে বৈঠক করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আকস্মিক পরিদর্শনও হয়। তাতেই জমিতে জল জমিয়ে ভেড়ির কথা সামনে আসে। তবে নোনা জলের অস্তিত্ব মেলেনি। ট্যাঙ্কারে করে নোনা জল আনা হচ্ছে কি না, তা-ও নজর রাখা হচ্ছে। জেলা ভূমি সংস্কার দফতরের পক্ষ থেকে জমির চরিত্র বদল নিয়েও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ সব কথা জেলা প্রশাসনের তরফে হাই কোর্টে জানানো হয়েছে।

আইনজীবীদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, ওই জমি দখল অন্তত বছর তিনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছেও অভিযোগ জমা পড়েছিল। কিন্তু তার পরেও সে ভাবে সক্রিয়তা চোখে পড়েনি। শেষে কোর্টের কড়া নির্দেশের পরে প্রশাসনের টনক নড়েছে। এই প্রসঙ্গেই সন্দেশখালি কাণ্ডের কথা সামনে এনেছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, সেখানেও তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের দলবল জমি দখল করে ভেড়ি তৈরি করেছিল। প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি। শেষমেশ আন্দোলন ও মামলা হওয়ার পরেই সেই সব জমি ফেরাতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Sabang pond

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy