Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Bank Loan

Crime: শিক্ষকের তথ্য দিয়ে বেনামে ঋণ ব্যাঙ্কের

তার পর থেকে বার বার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং সিবিল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা সত্ত্বেও সেই রেকর্ড ঠিক হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:১৪
Share: Save:

নথিপত্র-সহ আবেদন করার পরেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ‘পার্সোনাল লোন’ বা ব্যক্তিগত ঋণ পাননি এক স্কুলশিক্ষক। ঋণ না-দেওয়ার কারণ হিসেবে তাঁকে যা জানানো হল, তা শুনেই শিক্ষকের মাথায় হাত। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁর নামে আগেই নাকি বহু ঋণ নেওয়া হয়েছে এবং সেগুলি শোধ দেওয়া হয়নি! একটি ‘সিবিল’ (ঋণ নেওয়ার গ্রহণযোগ্যতা) রেকর্ডও দেওয়া হয় তপন বর নামে ওই শিক্ষককে। সেই রেকর্ডে তাঁর প্যান এবং আধার নম্বর থাকলেও রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তপন বারিক নামে কেউ ওই ঋণ নিয়েছেন।

ঘটনাটি ২০১৭ সালের। তার পর থেকে বার বার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং সিবিল কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা সত্ত্বেও সেই রেকর্ড ঠিক হয়নি। সেই বেনামি ঋণের বোঝা আজও শিক্ষকের ঘাড়ে চেপে রয়েছে। চার বছরেরও বেশি সময় ধরে সমানে দরবার করে লাভ না-হওয়ায় এ বার মামলা করেছেন তিনি। শীঘ্রই তার শুনানি হবে বলে জানান তপনবাবুর আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায়। ব্যাঙ্কিং অম্বুডসম্যানের কাছেও আবেদন জানান শিক্ষক। অভিযোগ, তাঁর বক্তব্য না-শুনেই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন অম্বুডসম্যান।

আপাতদৃষ্টিতে ঋণ সংক্রান্ত গোলমাল হলেও এর পিছনে বৃহত্তর বিপদের ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকেই। কারণ, ইদানীং নানা কাজে ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্যান, আধার নম্বরের মতো ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয়। সেই তথ্য ব্যবহার করে যদি ভুয়ো ঋণের কারবার চলে, তা হলে তার দায় এসে পড়বে সংশ্লিষ্ট প্যান এবং আধার নম্বরের আসল মালিকের ঘাড়ে। তার ফলে আর্থিক ক্ষেত্রে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে ছাপোষা গৃহস্থের। এ ক্ষেত্রে তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিক ও গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ আছে। কিন্তু তা আদৌ কতটা মেনে চলা হয়, সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই মামলা।

অনেক আইনজীবীর বক্তব্য, এই ধরনের কাজকর্মের ফলে গ্রাহকের নাগরিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। বড় বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। বিভাসবাবু বলেন, “শুধু অর্থনৈতিক জালিয়াতি নয়, এ ভাবে ব্যাঙ্কঋণ নিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকেও টাকা পাচার করা হতে পারে। সে-ক্ষেত্রে টাকার লোকসান তো হবেই, তার উপরে তপন বরের মতো সাধারণ নাগরিককে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত আইনি ঝামেলাতেও পড়তে হতে পারে।”

মামলাকারী প্রশ্ন তুলেছেন, ব্যাঙ্ক এক জনের প্যান এবং আধার নম্বরের ভিত্তিতে অন্য এক ব্যক্তিকে ঋণ দিল কী ভাবে? বার বার বলা সত্ত্বেও কেন সেই তথ্য শুধরে দেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bank Loan Fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE