দার্জিলিং মেলের বাতানুকূল এসি টু টিয়ার কোচে সফরের সময়ে সর্বস্ব খোয়া গেল ৬৩ বছরের এক প্রবীণা যাত্রীর।
জানা গিয়েছে, গত ২৭ জুন অরূপা চট্টোপাধ্যায় নামে ওই যাত্রী ও তাঁর মেয়ে দার্জিলিং মেলের এ১ কামরার ৩৫ ও ৩৬ নম্বর বার্থের যাত্রী ছিলেন। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ কামরার শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে দেখেন, তাঁর মাথার কাছে রাখা হাতব্যাগটি উধাও। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে বুঝতে পারেন, কামরা থেকে তাঁর হাতব্যাগটি চুরি গিয়েছে। ওই ব্যাগে নগদ চার হাজার টাকা ছাড়াও মোবাইল, রুপোর চেন, একাধিক এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, মেট্রোর স্মার্ট কার্ড, পেনশনের একাধিক জরুরি নথি ছিল। রাত ১১টা নাগাদ ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ওই কামরায় নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই যাত্রী। কামরা মোটামুটি ভর্তি থাকলেও সেখানে অবাঞ্ছিত যাত্রীর ভিড়ও খুব বেশি ছিল না। তবু মাঝরাতে কী ভাবে ব্যাগ উধাও হতে পারে, সেই প্রশ্ন উঠছে। একই কামরায় আরও এক মহিলা যাত্রীর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দার্জিলিং মেলের মতো মর্যাদাসম্পন্ন ট্রেনে বাতানুকূল কামরায় মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
যাদবপুর থানা এলাকার বিক্রমগড়ের বাসিন্দা ওই মহিলা যাত্রী প্রসারভারতীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। গত ৬ জুন শিলিগুড়িতে তাঁর মা বয়সজনিত কারণে মারা যান। তাঁর শেষকৃত্য-সহ অন্য কাজ মিটিয়ে মেয়ের সঙ্গে দার্জিলিং মেলে কলকাতায় ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়েই ঘটে ওই কাণ্ড। রাতের দিকে বিশেষ রাসায়নিক ব্যবহার করে যাত্রীদের তন্দ্রাচ্ছন্ন করে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। কারণ, মাঝরাতে নীচের বার্থে ঘুমোনোর সময়ে কেউ মিষ্টি গন্ধের রাসায়নিক ছড়াচ্ছে বলে মনে হয় তাঁর। তার পরেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এর পরে ঘুম ভাঙলে দেখেন, মাথার কাছে রাখা হাতব্যাগটি নেই। সে কথা জানান তাঁর শিক্ষিকা কন্যাকে। বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরেও ব্যাগ না পেয়ে তাঁরা সে কথা যাত্রী পরিষেবার দায়িত্বের থাকা রেলকর্মীদের জানালে তাঁরা কী করণীয়, বুঝে উঠতে পারেননি বলে অভিযোগ। পরে টিকিট পরীক্ষক বিষয়টি জেনে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। শনিবার সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে জিআরপি-র কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ।
গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ট্রেনে একক মহিলাদের সফরের ক্ষেত্রে বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে রেলে। এ ক্ষেত্রে ওই মহিলা একক ভাবে সফর না করলেও যে ভাবে তাঁর ব্যাগ চুরি হয়েছে, তাতে রেলে নিরাপত্তার ‘ফস্কা গেরো’-র তত্ত্বই জোরালো হয়ে উঠছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)