Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকাকে অপহরণের চেষ্টা, গুলিতে জখম দাদা

পুলিশ-প্রশাসনের নিষেধ তো ছিলই। বিয়েতে আপত্তি তুলেছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটিও। সে সব না শুনে স্বরূপনগরের যে যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সে বাদুড়িয়ার ওই ছাত্রীকে বিয়ের জন্য অপহরণ করে আটকে রাখে বলে ক’দিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল।

নির্মল বসু
স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৫
Share: Save:

পুলিশ-প্রশাসনের নিষেধ তো ছিলই। বিয়েতে আপত্তি তুলেছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটিও। সে সব না শুনে স্বরূপনগরের যে যুবকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সে বাদুড়িয়ার ওই ছাত্রীকে বিয়ের জন্য অপহরণ করে আটকে রাখে বলে ক’দিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশে যাওয়ার কথা বলে কোনওমতে মেয়েকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তার বাবা-মা। কিন্তু ছেলেটি নাছোড়। আর তার জেরেই হুলুস্থূল বাধল শনিবার সন্ধ্যায়। চলল গুলিও।

ফের অপহরণ ঠেকাতে মেয়েকে স্বরূপনগরের দক্ষিণ বাড়ঘরিয়া গ্রামে মামাবাড়িতে রেখে এসেছিলেন বাবা-মা। এ বার সেখানেই বাধে তুলকালাম। অভিযোগ, দলবল নিয়ে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মামাবাড়ি থেকে মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টা করে সোহাগ মিস্ত্রি নামে ওই যুবক। বাধা পেয়ে সে গুলিও চালিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। গুলিতে জখম হয় দশম শ্রেণির পড়ুয়া, ওই নাবালিকার মাসতুতো দাদা এবং আগ্নেয়াস্ত্রের বাটের আঘাতে জখম হন তার দাদু। গ্রামবাসী গণধোলাই দিয়ে সোহাগকে পুলিশে দেন। তার সঙ্গীরা পালায়।

পুলিশ জানায়, সোহাগের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, অনধিকার প্রবেশ এবং অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে। রিভলভারটি উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃত ওই যুবককে চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে বসিরহাট এসিজেএম আদালত।

ছাত্রীটি বলে, ‘‘আমি পড়তে চাই। জোর করেই বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল। তা বন্ধ হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ও আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রাখত। ও যে এমন করবে ভাবিনি।’’ এ দিন আদালতের পথে সোহাগ দাবি করে, ‘‘আমি মেয়েটিকে ভালবাসি। বিয়েও করেছি। তাই ওকে ছাড়তে চাই না।’’ একই সঙ্গে সে স্বীকার করেছে, ‘‘রিভলভার নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি। মাথার ঠিক ছিল না। এক বন্ধুর থেকে রিভলভার পেয়েছিলাম।’’ তবে, নাবালিকাকে সে কী ভাবে বিয়ে করল, তার সদুত্তর পুলিশকে দিতে পারেনি সোহাগ।

ওই নাবালিকার বাড়ি বাদুড়িয়ার রামচন্দ্রপুরে। বাবা চাষ করেন। কয়েক মাস আগে স্বরূপনগরের শাঁড়াপুল ডাকবাংলো এলাকার বাসিন্দা, বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র সোহাগের সঙ্গে নাবালিকার বিয়ে ঠিক হয়। পুলিশ এবং বিডিও সেই বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ের বয়স ১৮ না হলে বিয়ে হবে না— এই মর্মে পাত্র এবং পাত্রীপক্ষের থেকে মুচলেকাও নেওয়া নেয়।

অভিযোগ, বিয়ে বন্ধের দু’দিন পরে নাবালিকাকে অপহরণ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে সোহাগ। এক সপ্তাহ আগে মেয়েকে ফিরিয়ে আনেন বাবা-মা। পাঠিয়ে দেন মামাবাড়িতে। শনিবার রাত ৭টা নাগাদ বাড়ির বারান্দায় বসে দাদুর কাছে গল্প শুনছিল ওই নাবালিকা। তখনই মোটরবাইকে দুই সঙ্গীকে নিয়ে হাজির হয় সোহাগ। অভিযোগ, মেয়েটির মাথায় রিভলভার ধরা হয়। সে উঠে দাঁড়াতেই গুলি চলে। নাবালিকার মাসতুতো দাদার হাতের তালু ছুঁয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। তা দেখে মেয়েটির দাদু হামলাকারীকে ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার মধ্যেই তিন রাউন্ড গুলি চলে বলে স্থানীয়দের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kidnap child marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE