আটচল্লিশ ঘণ্টাও পার হল না।
বিমানবন্দর থানা এলাকায় আবারও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল। এ বার বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল দশম শ্রেণির এক ছাত্রের। মৃতের নাম প্রণয় মণ্ডল (১৫)। মামার সঙ্গে মোটবাইকে সে মঙ্গলবার কাঁচরাপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিল। বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেটের কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে একটি সরকারি বাস চাপা দেয় ওই ছাত্রকে। আহত হন ছাত্রের মামা। বাসটি আটক করেছে পুলিশ। তবে বাইকটি চাকা পিছলে উল্টে যায়, না কি বাসটিই বাইকে ধাক্কা মারে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
গত এক মাসের মধ্যে বিধাননগর কমিশনারেটের বিমানবন্দর থানা এলাকায় এই নিয়ে ছ’জনের মৃত্যু হল। গত রবিবার, ১৬ মার্চ মাইকেলনগরে যশোর রোডের উপরে লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক মহিলা ও এক বৃদ্ধের। তার আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও যশোর রোডের সংযোগস্থলে লরি পিষে দিয়েছিল এক পরিবারের তিন জনকে।
এ দিনের দুর্ঘটনায় মৃত ছাত্র বাগুইআটির অর্জুনপুরের বাসিন্দা। স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত সে। পরিবারের একমাত্র সন্তান। পরিজনেরা জানান, ঘটনার অভিঘাতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত প্রণয়ের মামা। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, ঠিক ভাবে বলতে পারছেন না। কখনও বলছেন, বাইকটিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে বাসটি, কখনও বলছেন বাইকের চাকা পিছলে যায়। পরিজনেরা জানান, দুর্ঘটনায় প্রণয়ের মাথায় থাকা হেলমেটটি দুমড়ে গিয়েছে। পুলিশ ওই ছাত্র এবং তাঁর মামাকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে প্রণয়কে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়না তদন্তের পরে এ দিনই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পরের পর দুর্ঘটনায় ত্রস্ত ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, যশোর রোড ও সংলগ্ন এলাকায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলে। এই প্রবণতা বেশি দেখা যায় আড়াই নম্বর গেট থেকে দোলতলার মধ্যে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ও সংলগ্ন এলাকাতেও লরির বেপরোয়া চলাচল নিয়ে প্রচুর অভিযোগ বাসিন্দাদের। কখনও কখনও অবশ্য পথচারী কিংবা সাইকেল আরোহীরাও বেপরোয়া ভাবে চলতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়েন।
বিধাননগর পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিকের যদিও দাবি, পথ-নিরাপত্তার জন্য তাঁরা সব সময়ে কাজ করছেন। সামগ্রিক ভাবে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)