সবে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। একমনে পরীক্ষা দিচ্ছিল পড়ুয়ারা। এমন সময়েই ভেঙে পড়ল ক্লাসের সিলিং পাখা! দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার একটি স্কুলে ওই ঘটনায় জখম এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। দাবি, পাখার অংশ ওই পড়ুয়ার মাথায় ভেঙে পড়েছিল। ওই ঘটনার পরেই জখম ছাত্রীকে মহেশতলা পুরসভার মাতৃসদনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঙুর হাসপাতালে। পরে হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিয়েছে ওই ছাত্রী।
মহেশতলা পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাটানগর শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের ওই ঘটনায় ছ’জনকে শো কজ় করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যে ছ’জনকে শো কজ় করা হয়েছে, তাঁরা হলেন সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার ইনচার্জ, মনিটরিং টিমের সদস্য, জেলা জয়েন্ট কনভেনর এবং জেলা কনভেনর। পর্ষদ জানিয়েছে, তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই পড়ুয়ার খোঁজ নেওয়া হয়েছিল। পাখা ভেঙে পড়ায় ওই ছাত্রী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। হাসপাতালে কিছু পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন ছিল। তা করা হয়েছে। পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
স্কুল সূত্রে খবর, আহত ছাত্রীর নাম নন্দিনী মাকাল। সে বাটানগরের বাংলা জাতীয় শিক্ষা মন্দিরের ছাত্রী। ওই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা বাটানগর শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। স্কুল সূত্রে খবর, পরীক্ষা শুরু হওয়ার মিনিট ১৫ পরেই ঘটনাটি ঘটে। স্কুলের আর এক ছাত্রী বলে, ‘‘পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই ঘটনাটি ঘটে। হঠাৎ পাখা ভেঙে পড়েছিল। নন্দিনীর মাথায় লেগেছে। উঠে দাঁড়াতেই পারছিল না। পরে বমিও করেছে। তার পরেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
বাটানগর শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রয় বিবেকানন্দ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক অমিত ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, পাখা ছাত্রীর গায়ে পড়েনি। তাঁর কথায়, ‘‘এটি একটি দুর্ঘটনা। আমরা পরীক্ষার জন্য সব ক’টা নতুন ফ্যান লাগিয়েছিলাম। মেয়েটার গায়ে পড়েনি। মেয়েটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা করানো হয়। মেয়েটা পরে পরীক্ষাও দিয়েছে।’’
এই ঘটনায় ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’ (এএসএফএইচএম)-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের উদাসীনতায় এ ধরনের ঘটনা আগামী দিনেও ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। তাই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।। এর আগে মালদহে দেওয়াল চাপা পড়ে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। শিক্ষা দফতর তথা রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের একান্ত আবেদন, আর্থিক সহায়তা দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বাঁচান।। নয়তো এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা এড়ানো যাবে না।’’