গত বৃহস্পতিবার ‘ইন্ডিয়া’র নেতাদের নৈশাহারে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব্য-উষ্ণতা বঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন তৈরি করেছে। চলতি বাদল অধিবেশনেও কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে কক্ষ-কৌশল তৈরির বৈঠকে প্রতিদিন গিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতারা।
প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস এবং তৃণমূলের এই ‘নৈকট্য’ কি বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতায় প্রভাব ফেলতে পারে? আজ এই প্রশ্নে অভিষেক বলেন, “বিধানসভা ভোটে আমাদের কিছু দেওয়ার নেই কংগ্রেসকে। কংগ্রেসের একটিও আসন নেই। আমরাও একা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। কাউকে প্রয়োজন নেই। তা ছাড়া কংগ্রেস তো সিপিএমের সঙ্গে জোট করে নেয়।” কিন্তু এ বারে যদি তারা বাম-সঙ্গ পরিত্যাগ করে আসন চায়? অভিষেকের বক্তব্য, “সেটা ওদের ব্যাপার।” একুশে যে সব আসন জিতেছে বিজেপি, সেগুলিও কংগ্রেস চাইলে দেওয়া হবে না? অভিষেকের বক্তব্য, “অনেক আসনেই সামান্য ভোটে হেরেছি। আশা করছি, সেগুলিতে জিতব। বাকি আসনেও ভাল জায়গায় রয়েছি। কংগ্রেসের সাহায্য নিয়ে জিততে হবে না।”
তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কংগ্রেসকে যদি আসন ছাড়াও হয়, তা যে খুবই সামান্য তা স্পষ্ট। আর সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনও আসেনি বলেই তৃণমূল নেতৃত্বের মত। অভিষেকের বক্তব্য, “বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে আমাদের সঙ্গে কংগ্রেসের অবস্থানগত ফারাক তো নেই। লোকসভা ভোটের আগে আসন সমঝোতার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম, কিন্তু কংগ্রেস হাত গুটিয়ে বসেছিল। ভেবেছিল মাঝের কয়েকটি বিধানসভা আসনে জিতে দরকষাকষি করবে। আমরা ’২৩-এর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। কংগ্রেসকেও তো পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক বাস্তবতা বুঝতে হবে।”
তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের মতে, তাঁর দল জোটের পক্ষে। কিন্তু বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের পাশাপাশি বাংলার স্বার্থ তৃণমূলের অগ্রাধিকার। বাদল অধিবেশনে বাংলা ও বাঙালির হেনস্থা নিয়ে কংগ্রেস তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছে। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় একাধিক কংগ্রেস সাংসদ বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। অভিষেকের কথায়, “কংগ্রেস যদি আমাদের সঙ্গে কয়েক পা হাঁটে, আমরাও তাদের সঙ্গে পা মিলিয়ে হাঁটব।” এ বারের বাদল অধিবেশনে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে অধীর চৌধুরী সরে দাঁড়ানোর পরে দু’দলের তিক্ততা কমেছে। অভিষেকের বক্তব্য, “অধীরবাবু কী বলতেন, তা সবাই জানি। তিনি যে ভাবে রাজনীতিটা করতেন, তাতে আখেরে বিজেপির-ই সুবিধা হত।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)