বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের ‘শাস্তি’ অ্যাসিড-হামলা! আসানসোলের পরে সেই একই ছবি এ বার পাঁশকুড়ায়। তবে এ বার অ্যাসিডে বেশি ক্ষতি হল বিয়ে করতে নারাজ নাবালিকার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছোট বোনের। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, বছর তেরোর ওই কিশোরীর দু’টি চোখই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
পাঁশকুড়া থানার নারান্দা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে। অ্যাসিড ছোড়ায় অভিযুক্ত ওই পরিবারেরই বড় মেয়ের দেওর।
দেশের বিভিন্ন অংশে মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলার ঘটনা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট ২০১৩ সালের ১৬ জুলাই অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। তার পর বছর ঘুরতে চললেও এই ধরনের ঘটনা যে ঠেকানো যাচ্ছে না, পাঁশকুড়ার হামলা আর এক বার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখালো।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের কাছে এক তলা পাকা বাড়ির ঘরে মা-র সঙ্গে ঘুমিয়েছিল মেজ ও ছোট বোন। জানলার ধারে ছিল মেজ বোন, মাঝে ছোট বোন আর তার পাশে মা। বাবা ছিলেন পাশের ঘরে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাত ২টো নাগাদ মেজ মেয়েকে লক্ষ করে অ্যাসিড ছোড়া হয় বলে অভিযোগ পেয়েছে তারা। দুই বোন ও মা-সহ তিন জনেরই হাত-পা-মুখের নানা অংশ ঝলসে যায়। সব থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থা ছোট মেয়েটির। তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকি দু’জনের চিকিৎসা চলছে তমলুক জেলা হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার ভোরে ওই নাবালিকার বাবা বড় মেয়ের দেওর সাকির মহম্মদের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। রাত পর্যন্ত অবশ্য তাকে ধরতে পারেনি পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “তল্লাশি শুরু হয়েছে।” মেয়েটির মা বললেন, “মেজ মেয়ে বিয়েতে রাজি ছিল না বলে সাকির ক্ষতি করার হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু এমন ক্ষতি করবে ভাবতে পারিনি!”
আসানসোলের চিত্তরঞ্জন স্টেশনে অ্যাসিড-হানার ঘটনাটি ঘটে গত ১৭ জুন। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিবাহবিচ্ছিন্না এক মহিলাকে অ্যাসিড ছুড়েছিল নদিয়ার রানাঘাটের যুবক রিপন দাস। চিত্তরঞ্জন রেল পুলিশ জানিয়েছে, রানাঘাট থানার সহযোগিতায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। তবে হদিস মেলেনি। খোঁজ চলছে। অ্যাসিড হামলায় আক্রান্ত ওই মহিলা বাবার বাড়িতেই আছেন। তাঁর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের মতো যাদের উপরে অ্যাসিড-হামলা হয়েছে, তাদের সবারই চূড়ান্ত শাস্তি হওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy