Advertisement
E-Paper

সব স্কুল বন্ধ, ঝড় সামলাতে সরানো হচ্ছে লোকজন 

শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতার আকাশ মেঘলা। সঙ্গে টিপটিপ বৃষ্টি। কখনও কখনও ঝোড়ো হাওয়া। সাগরদ্বীপ, দিঘায় সমুদ্র অশান্ত। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে বৃষ্টি। রাত যত বেড়েছে, বেড়েছে ঝড়ের বেগ, বৃষ্টিও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৬
মাইকে চলছে প্রচার। ছবি: সুমন সাহা

মাইকে চলছে প্রচার। ছবি: সুমন সাহা

পাকিস্তান দিয়েছে কাব্যিক নাম— ‘বুলবুল’। সেই ঘূর্ণিঝড়ই অতিপ্রবল হয়ে বিপর্যয় নিয়ে আজ, শনিবার আছড়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন আবহবিদেরা। শুক্রবার রাতের উপগ্রহ অনুযায়ী শনিবার বিকেল ও রাতের মধ্যে সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশ উপকূলের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়। বুলবুল যেখানে ছোবল মারবে, সেখানে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে। এই অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করে দিতে পারে সব।

শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতার আকাশ মেঘলা। সঙ্গে টিপটিপ বৃষ্টি। কখনও কখনও ঝোড়ো হাওয়া। সাগরদ্বীপ, দিঘায় সমুদ্র অশান্ত। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে বৃষ্টি। রাত যত বেড়েছে, বেড়েছে ঝড়ের বেগ, বৃষ্টিও। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শিক্ষা দফতর আজ, শনিবার কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের সব স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছে। শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট বাতিল করা হয়েছে।

ঝড়ের মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য সরকার। সাগরদ্বীপ-সহ সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো শুরু হয়েছে। ঘোষণা চলছে মাইকে। বকখালি, সাগরদ্বীপে পর্যটকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ড থেকে মোটরবাইকে সুন্দরবনে পৌঁছেছিল জনা কুড়ির একটি দল। গত কয়েক দিনে তারা বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরেছে। কিন্তু ঝড়ের সতর্কতা পেয়েই শুক্রবার সুন্দরবন ছাড়েন ওই বিদেশি পর্যটকেরা।

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের সাতকাহন​

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে এগোচ্ছে বুলবুল, কলকাতায় ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা

বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত আশঙ্কা ছিল, বুলবুল আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশা-পূর্ব মেদিনীপুর উপকূল দিয়ে। শুক্রবার ঝড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিকে এগিয়ে যাওয়ায় কিছুটা আশ্বস্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তবু দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুরের সৈকতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। মাইকে পর্যটক ও ধীবরদের সতর্ক করছে পুলিশ।

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, সুন্দরবন এলাকায় ঝড় আছড়ে পড়লেও কলকাতায় বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। কারণ, ঢাল হয়ে কলকাতা ও উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশির ভাগ উপকূলবর্তী এলাকাকে রক্ষা করছে সুন্দরী, গরানের মতো ম্যানগ্রোভের জঙ্গল। কলকাতায় প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

নবান্নে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। তাদের নম্বর ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬। পদস্থ অফিসারেরা পালা করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসবেন। অযথা আতঙ্কিত না-হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।

কলকাতা পুলিশের ট্রেনিং স্কুলে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষ দলকে সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি রাখা হচ্ছে। ছ’টি ডিভিশনেই একটি করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী থাকবে। গাছ বা বাড়ি ভেঙে পড়লে আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করবে তারা। পরিস্থিতি দেখে গঙ্গায় ফেরি চলাচল বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরে ছুটি বাতিল। কন্ট্রোল রুম খোলা ২৪ ঘণ্টা। পুরসভার খবর, ৭০ থেকে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিমানবন্দরের আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ রাতে ৩৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে হাওয়া বইতে পারে। তা হতে পারে বিপরীতমুখীও। সেটা বিমান নামার অনুকূল হবে না। শনিবার বিকেলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কলাইকুন্ডায় সিঙ্গাপুর বিমানবাহিনীর একটি দল ছ’টি এফ-১৬ বিমান নিয়ে এসেছে মহড়ার জন্য। সেগুলিকে বাগডোগরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Cyclone Bulbul KMC School
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy