কখনও ফেরিওয়ালা, কখনও আবার জামাকাপড় বিক্রেতা সেজে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিল জঙ্গি নেতা মহম্মদ ইজাজ। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদস্য ইজাজ এ দেশে ‘আমির’ (প্রধান) হিসাবে নিযুক্ত ছিল। তাকে গ্রেফতারের পর এ বার আল কায়দা ঘনিষ্ঠ সালাউদ্দিনকে কব্জায় নিতে চায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গত বছর খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কওসর গ্রেফতার হওয়ার পরেই ইজাজের নেতৃত্বে ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সালাউদ্দিন।
গত রবিবার এসটিএফ বিহারের গয়া থেকে ইজাজকে গ্রেফতার করে। প্রায় এক দশক ধরে আত্মগোপন করে ছিল ইজাজ। এই সময় সে নতুন কোনও ‘জঙ্গি মডিউল’ বানিয়েছে কি না, তা জানতে চান গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার ইজাজকে কলকাতায় আনার পর ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করা হয়। এ দিন আদালতে এসটিএফের তরফে জানানো হয়, ২০১৮-য় জেল থেকে কওসরকে কী ভাবে বার করা যায়, তার মাস্টার প্ল্যান বানিয়েছিল ইজাজ। তার কাছ থেকে পাওয়া নথিপত্র, ছ’টা মোবাইল এবং ট্যাবের তথ্য ডিকোড করা হবে। এ বিষয়ে আরও জানতে তাকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়। বিচারকের নির্দেশে আপাতত ইজাজকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখে জেরা করতে পারবে পুলিশ। জেরায় ভারতে জেএমবি-এর কার্যকলাপের বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে এসটিএফ।
এ দেশে ‘আমির’ হওয়ার কারণে তার হাত ধরেই জঙ্গি রিক্রুট হত। কোথায়, কী ভাবে হামলা চালানো হবে, তা ঠিক করত ইজাজ। ছিপছিপে গোবেচারা মার্কা চেহারার ইজাজকে দেখে বোঝার উপায় নেই সে জঙ্গি নেতা। বীরভূমের পাড়ুইয়ের অবিনাশপুরে বাসিন্দা ইজাজকে দীর্ঘ দিন ধরে খুঁজছিল বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। অবশেষ এসটিএফের জালে ইজাজ। এই গ্রেফতার বড়সড় সাফল্য বলে মনে করছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: মিলে পেট ভরে ভাত-ডাল খাক বাচ্চারা, মত মমতার
খোঁয়াড়ে গরু-মোষের বরাদ্দে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা! পুলিশের চোখ কপালে
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত কওসর ওরফে বোমা মিজান গত বছর বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার হয়। আল কায়দা ঘনিষ্ঠ শাখার প্রধান সালাউদ্দিনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখত ইজাজ এবং কওসর। তাদের নেতৃত্বে এ দেশে ‘জঙ্গি মডিউল’-এ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছিল। ইজাজের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক, চিঠি-সহ জঙ্গি কার্যকলাপের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।