Advertisement
E-Paper

BJP Protest: মুখ্যমন্ত্রীরও ইস্তফা চাই, চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা 

কলকাতায় বুধবার একসঙ্গে তিনটি কেন্দ্রীয় মিছিল। একই দাবিতে পর দিন, বৃহস্পতিবার শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২২ ০৭:০২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিক্ষা ক্ষেত্রের কেলেঙ্কারিতে রাজ্য সরকারের উপরে চার আরও বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। অভিযুক্ত মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারীদের অপসারণের পাশাপাশি এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতেও রাস্তায় নামছে বাম ও বিজেপি। রাজ্যের নানা জায়গায় গত কয়েক দিনে এই দাবিতে মিছিল করেছে বামেরা। কলকাতায় আজ, বুধবার তাদের একসঙ্গে তিনটি কেন্দ্রীয় মিছিল। একই দাবিতে পর দিন, বৃহস্পতিবার শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপিও।

তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এমন দাবি তোলার জন্য পাল্টা বিঁধছে বাম ও বিজেপিকে। তৃণমূলের নেতা তাপস রায়ের বক্তব্য, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছে। তার তদন্ত হচ্ছে, আদালতে বিচার হবে। কেউ দোষী হলে সাজা হবে। বেঙ্গল ল্যাম্প কেলেঙ্কারির পরে জ্যোতি বসু কি পদত্যাগ করেছিলেন? না কি হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া বন্ধুদের বা ব্যাপম কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়েছেন? ক্ষমতার জন্য উতলা বাম ও বিজেপিকে তো মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করার আগে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’’

সিপিএমের দাবি, শাসক দল ও মন্ত্রিসভার সদস্যেরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়ার পরেও যে মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, বরং আদালতকে দেখিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর ক্ষমতায় থাকার ‘নৈতিক অধিকার’ নেই। পার্থবাবুকে অবিলম্বে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি বাংলায় কয়েক বছর ধরেই ‘ওপেন সিক্রেট’। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরে তবেই এই নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে যা ধরা পড়েছে, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি তাতে কালিমালিপ্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী এখন সরকারে যে সব দায়িত্বে আছেন, সেখান থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। এই সূত্রেই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেছেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রীদের বরখাস্তের দাবি তো আমরা করেছিই। কিন্তু বাংলার সর্বনাশ করার পরে, কলুষিত করার পরে ক্ষমতায় থাকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও নৈতিক অধিকার আছে না কি ক্ষমতায় থাকার? যুবক ছেলে-মেয়েদের সর্বনাশ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। শুধু পার্থ বললে হবে এখন? উনি কিছুই জানতেন না, সাধু?’’

একই দাবি সামনে রেখে পথে নামতে চলেছে বিজেপিও। কলকাতায় বৃহস্পতিবার তারা ‘মহামিছিলে’র ডাক দিয়েছে ‘চোরেদের জেলে ভরো, মমতা গদি ছাড়ো’ স্লোগান দিয়ে। ওই দিন কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল হবে বিজেপির। ওই দিন মিছিলে কলকাতা ছাড়াও সংলগ্ন জেলাগুলিকে ব্যাপক জমায়েতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মেধা-তালিকার ভিত্তিতে শূন্য পদে যোগ্য শিক্ষক-প্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রিসভার মুখ্যমন্ত্রীরও পদত্যাগের দাবিতে আজ পার্ক সার্কাস, হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে বামফ্রন্টের তিনটি মিছিল গান্ধীমূর্তির কাছে নিয়োগ-প্রার্থীদের অবস্থান-মঞ্চের দিকে যাবে। কলকাতার জমায়েত পার্ক সার্কাসে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জমায়েত শিয়ালদহ এবং হাওড়া ও হুগলির জমায়েত হাওড়া স্টেশন চত্বরে করার আয়োজন করেছে বামেরা। সর্ব স্তরের মানুষকেই প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আবেদন জানিয়েছে তারা।

নিয়োগ-দুর্নীতি এবং পার্থের গ্রেফতার ঘিরে বিজেপির যুব মোর্চার মিছিলকে কেন্দ্র করে এ দিনই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছে ব্যারাকপুরের চিড়িয়া মোড় এলাকায়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক ফাল্গুনী পাত্র, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি বিমিলেশ তিওয়ারি-সহ বেশ কয়েক জন কর্মী জখম হন। তাঁদের ব্যারাকপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তাতে কয়েক জন বিজেপি কর্মী অল্প-বিস্তর জখম হন। যদিও পুলিশের তরফে লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বেশ কয়েক জন কর্মীকে আটক করে পুলিশ। বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ হামলা করেছে। মহিলা কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। আমাদের ১৩ জন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এ দিন পার্থের কুশপুতুল দাহ করে বিক্ষোভ দেখায় এবিভিপি।

দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং নিয়োগ-প্রার্থীদের প্রতি সংহতি জানাতে এ দিন অবস্থান-মঞ্চে গিয়েছিল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের তরফে পার্থ ঘোষ, কার্তিক পাল, নীলাশিস বসুদের প্রতিনিধিদল। আন্দোলনকারীরা তাঁদের প্রস্তাব দিয়েছেন, বিচারপতিকে গোটা পরিস্থিতি জানিয়ে চিঠি দেওয়ার জন্য। স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে ফের চিঠি দেওয়া হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকেও।

BJP Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy