Advertisement
E-Paper

রেল অবরোধকে ঘিরে রণক্ষেত্র হাবরা, ছ’ঘন্টা বন্ধ ট্রেন চলাচল

মাতৃভূমি লোকালে পুরুষ যাত্রীদের উঠতে না দেওয়ার দাবিতে অবরোধ এবং এই অবরোধের বিরুদ্ধে সাধারণ যাত্রীদের অবরোধে সপ্তাহের শুরুতেই ব্যাহত হল শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার ট্রেন চলাচল।দফায় দফায় অবরোধ-বিক্ষোভ হয় গোবরডাঙা, মসলন্দপুর, হাবরা, দত্তপুকুর এবং অশোকনগরে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৫ ১০:১১
হাবরায় অবরোধ নিত্যযাত্রীদের। আটকে মাতৃভূমি লোকাল।

হাবরায় অবরোধ নিত্যযাত্রীদের। আটকে মাতৃভূমি লোকাল।

ফের মাতৃভূমি লোকালকে ঘিরে বিবাদ। গত সপ্তাহে দু’দিন ভোগান্তির পর সপ্তাহের প্রথম দিনে আবারও সেই রেল অবরোধের জেরে ভুগতে হল সাধারণ যাত্রীদের। সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় অবরোধ করা হয় গোবরডাঙা, মছলন্দপুর, হাবরা, অশোকনগর এবং দত্তপুকুরে। হাবরা স্টেশনে ট্রেন ভাঙচুর পর্যন্ত করা হয়। এর জেরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় ট্রেন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।

মাতৃভূমি লোকালে পুরুষ যাত্রীদের উঠতে দেওয়া না-দেওয়াকে ঘিরে এ দিন ফের বিবাদ বাদে। আগের ঘটনার কথা মাথায় রেখেই এ দিন মাতৃভূমি লোকালের প্রতিটি কামরায় রেলপুলিশ মোতায়েন করা হয়। স্বভাবতই পুরুষ যাত্রীরা ওই ট্রেনে উঠতে না পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মাতৃভূমি লোকাল গোবরডাঙা স্টেশন ছাড়তেই পুরষ যাত্রীরা অবরোধ শুরু করেন। হাবরা স্টেশনে মাতৃভূমি লোকাল ঢোকার আগেই আটকে দেন পুরুষ যাত্রীরা। তাঁদের হঠাতে ঘটনাস্থলে যায় রেলপুলিশ। তখনকার মতো অবরোধকারীদের হঠিয়ে দিলেও মাতৃভূমি লোকাল হাবরা স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। পাথরের আঘাতে হাবরা থানার সাব-ইন্সপেক্টর নন্দন মণ্ডল-সহ কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হন। ভাঙচুর চালানো হয় মাতৃভূমি লোকালে। মহিলারা ভয়ে ট্রেনের দরজা আটকে পরিত্রাহি চিত্কার করতে থাকেন সাহায্যের জন্য। পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী সেখানে পৌঁছয়। পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাবরা স্টেশন চত্বর।

রেলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ দিন থেকেই মাতৃভূমি লোকালে পুরুষ যাত্রীদের ওঠার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। কিন্তু রেলের সেই সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফের শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখাকে অবরুদ্ধ করে দিলেন পুরুষ যাত্রীরা। সপ্তাহের শুরুতেই ফের আর একটা ভোগান্তির শিকার হতে হল নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ এবং স্কুলপড়ুয়াদের। পুরুষ যাত্রীদের দাবি, মেয়েরা যদি অবরোধ-বিক্ষোভের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার বজায় রাখতে পারে, তা হলে পুরুষরা কেন পারবে না! তাদের আরও দাবি, মাতৃভূমি লোকালে জেনারেল কামরার ব্যবস্থা করতে হবে। এ দিকে, অবরোধের জেরে সময় মতো গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে না পারার জন্য এই অবরোধের পাল্টা অবরোধ শুরু করেন সাধারণ মানুষ। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে ওঠে।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “সকাল ৭.৫৫ থেকে অবরোধ চলছে। যাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। রেলমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ থেকে মহিলা স্পেশালে পুরুষদের ওঠার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। রেলের তরফে যাত্রীদের বার বার বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, তা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


হাবরায় ট্রেনে ভাঙচুর অবরোধকারীদের।

গত ১৯ অগস্ট এই মাতৃভূমি লোকালকেই কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে শিয়ালদহ মেন লাইনের খড়দহ স্টেশনে। বিক্ষোভ-অবরোধের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখাতেও। মহিলা স্পেশালে পুরুষরা কেন উঠবে তা নিয়ে মহিলা যাত্রীরা অবরোধ শুরু করেন। অন্য দিকে, মহিলা স্পেশালে পুরষদের কেন উঠতে দেওয়া হবে না সেই দাবিতে পাল্টা অবরোধে নামেন পুরুষ যাত্রীরা। একই দাবিতে পর পর তিন দিন ওই শাখায় বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ চলে।

বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ একটি ট্রেন অশোকনগর থেকে শিয়ালদহের দিকে রওনা হয়। তবে, হাবরা এবং গোবরডাঙায় এ দিন দুপুর পর্যন্ত চলে। ফলে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি।

ছবি: শান্তনু হালদার।


Rail line male passengers police train matribhumi local
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy