—প্রতীকী ছবি।
সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা। গরমের লেশমাত্রও নেই। বেলা গড়াতেই শুরু হয়েছিল দফায় দফায় ঝড়বৃষ্টি। সন্ধ্যার পরেও ঝড়বৃষ্টি অব্যাহত থেকেছে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার সারাংশ এটাই। আজ, শুক্রবারও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। আগামী কয়েক দিনে অসহনীয় গরম ফিরবে, এমন আশঙ্কাও দেখছেন আবহবিদেরা। বরং এই বৃষ্টিতে বহু ক্ষেত্রে চাষবাসের উপকার হবে বলেই মনে করছেন কৃষিবিদেরা। আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে ভোটের প্রচারে। খারাপ আবহওয়ার কারণে বীরভূমের রামপুরহাটে নির্ধারিত সভায় আসতে পারেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুরে আজ বাতিল হয়েছে দেবের রোড-শো।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত আছে। তার সঙ্গে অসম থেকে ওড়িশা পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। এই জোড়া ফলা বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প গাঙ্গেয় বঙ্গে টেনে আনছে। তার ফলেই ঝড়বৃষ্টির উপযোগী বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে। এ দিন দুপুরে কলকাতার একাংশে শিলাবৃষ্টির খবরও মিলেছে। আবহবিদেরা জানান, দুপুরে কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকার উপরে স্থানীয় ভাবে মেঘ তৈরি হয়েছিল। তা থেকে এক পশলা জোরালো বৃষ্টি হয়েছে। বিকেলের পর রেডার চিত্রে ধরা পড়ে যে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টি ঘটাতে ঘটাতে তা সন্ধ্যায় কলকাতা এবং লাগোয়া জেলাগুলিতে হাজির হয়।
এ দিন বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় দুপুরে প্রায় আধ ঘণ্টা ঝড়ের পাশাপাশি কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে। পাত্রসায়রের নারায়ণপুরের স্বরূপ বিশ্বাস, কুশদ্বীপের উৎপল ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও কিছু জমিতে ধান আছে। এ দিনের ঝড়বৃষ্টিতে জলকাদায় মাখামাখি হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির ভয় পাচ্ছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কিছু জায়গায় করলা, কুঁদরি, ঝিঙে, শসার মাচা ভেঙেছে। যদিও উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মৃদুলকুমার ভক্তা বলছেন, ‘‘বোরো ধান তো প্রায় উঠেই গিয়েছে। সামান্য মাঠে আছে। ঝড়বৃষ্টিতে তার ক্ষতি হবে না। বরং এই বৃষ্টি অন্যান্য চাষাবাসে উপকারই করবে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সকালে নলহাটি এবং দুপুরে মুরারই, বোলপুর, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, রামপুরহাট-সহ বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে।
পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কিছু জায়গায় বৃষ্টিতে জল জমে যায়। কৃষি আধিকারিকেরা জানান, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পাট ও তিলের জমিতে ফাটল ধরছিল, গাছ শুকিয়ে যাচ্ছিল। এই বৃষ্টি সেই চাষে সহায়ক হবে। হুগলির তারকেশ্বরের রামনগরের চাষি অনুপ ঘোষ বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে তিল এবং বাদাম চাষের পক্ষে খুবই উপকার হল। বালি মাটিতে চাষ হয়। তাই জল জমিতে দাঁড়ানোর কোনও সমস্যা নেই।’’ ধনেখালির চাষি কাশীনাথ পাত্রও বলেন, ‘‘চড়া রোদে ফসল হলুদ হয়ে যাচ্ছিল। গাছ শুকিয়ে যাচ্ছিল। বৃষ্টিতে বহু জমির ফসল রক্ষা পেল।’’ এ দিন দুপুরে উত্তর দিনাজপুর ও মালদহে অল্প বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসও বয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভারী বৃষ্টি না হলে ধান ও পাট চাষে সমস্যা বাড়বে বলে দাবি কৃষি দফতরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy