Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
State News

হাজরায় মমতার উপর হামলা, ২৯ বছর পর ‘প্রমাণের অভাবে’ বেকসুর খালাস লালু আলম

১৯৯০-এর ১৬ অগস্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেস নেত্রী। ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব আজকের মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনও তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল হাজরা মোড়ে। সেই সময় কয়েকজন তাঁর উপর চড়াও হন লাঠিসোটা নিয়ে। লাঠির আঘাতে মাথা ফাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই আঘাতের জেরে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাঁকে।

১৯৯০-এর ১৬ অগস্ট। ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারের বিরুদ্ধে হাজরা মোড়ে প্রতিবাদে সরব আজকের মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন তাঁর উপর চড়াও হন লাঠিসোটা নিয়ে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

১৯৯০-এর ১৬ অগস্ট। ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারের বিরুদ্ধে হাজরা মোড়ে প্রতিবাদে সরব আজকের মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন তাঁর উপর চড়াও হন লাঠিসোটা নিয়ে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৪৬
Share: Save:

মামলা চলেছে ২৯ বছর ধরে। অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারার অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন লালু আলম। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাঁকে বৃহস্পতিবার বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত।

১৯৯০-এর ১৬ অগস্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেস নেত্রী। ক্ষমতায় থাকা বাম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব আজকের মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনও তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল হাজরা মোড়ে। অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন তাঁর উপর চড়াও হন লাঠিসোটা নিয়ে। লাঠির আঘাতে মাথা ফাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই আঘাতের জেরে দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাঁকে।

‘হামলা’র মূল পাণ্ডা হিসাবে উঠে আসে তালতলার বাসিন্দা লালু আলমের নাম। কলকাতা পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে। লালু আলম-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দেয় তারা। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে ওই মামলার চার্জ গঠন থেকে শুরু করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে কেটে যায় বহু বছর।

আরও পড়ুন: এনআরসি হবেই বঙ্গে, বাদ যাবে দু’কোটি: দিলীপ

গত বছর সেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর দেখা যায় লালু আলম ছাড়া ওই মামলায় যাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল তাঁরা হয় পলাতক নয়তো মৃত। সরকার পক্ষের আইনজীবী মামলার অধিকাংশ সাক্ষীকেই হাজির করাতে পারেননি বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন। এই মামলায় আইনগত দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষ্য। ঠিক হয়েছিল, ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিকাঠামোর অভাবে সেই সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন: সিবিআইয়ে হাজিরা ফের এড়ালেন শুভেন্দু, কণ্ঠস্বরের নমুনা দিয়ে বেরিয়ে কাকলির অভিযোগ, ‘ষড়যন্ত্র হয়েছে’

ফলে এ দিন রায় শোনানোর সময় আলিপুর আদালতের বিচারক পুষ্পল শতপথী বলেন,‘‘যা তথ্য-প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়েছে, তা থেকে ওই হামলায় লালু আলম প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত এমনটা প্রমাণিত হয় না।” তিনি প্রমাণের অভাবের কথা উল্লেখ করে লালুকে বেকসুর খালাস করা হল বলে ঘোষণা করেন।সরকার পক্ষের আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন,‘‘আমরা অনেক দিন আগেই আদালতে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলাম যে, আমাদের কাছে নতুন কোনও সাক্ষ্য বা তথ্য নেই।”

এ দিন আদালতে স্পষ্টতই খুবই খুশি দেখায় লালু আলমকে। রায় প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি ফিরে যান ঘটনার দিনে। লালুর কথায়, ‘‘ঘটনা ঘটল হাজরাতে। রাত ১টার সময় আমাকে ছ’টি থানার পুলিশ এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল বাড়ি থেকে। তার পর আড়াই মাস জেলে!” তিনি বলেন, ‘‘আদালতের রায় শুনে খুব ভাল লাগছে। অনেক দিনের লড়াইয়ের ফল।”

লাঠির আঘাতে মাথা ফাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

তবে নিজের হতাশাও লুকিয়ে রাখতে পারেননি লালু। তাঁর কথায়, ‘‘এ দিনটা আগে এলে আরও ভাল হত। জীবনটা হত অন্য রকম।’’ ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি জানান, ওই সময়ে সিপিএম চাইত কংগ্রেস ভাগ হয়ে যাক। অন্য দিকে সিপিএমের মধ্যেও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব ছিল। তাঁর দাদা বাদশা আলম ছিলেন দক্ষিণ কলাকাতায় সিপিএমের নেতা। লালুর দাবি, বাদশার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী চেষ্টা করছিল তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে। যাতে অন্য গোষ্ঠীর নেতা ভোটে টিকিট পান। লালু বলেন, ‘‘আমরা সিপিএম পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হই।” রায় শোনার পর সব শেষে তিনি বলেন যে, ‘‘কোনও রাজনীতির সঙ্গে আর যোগ রাখতে চাই না।’’

লালুর খালাস প্রসঙ্গে মমতা এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। মন্তব্য করেনি তৃণমূলও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE