শনিবার বিচার ভবনে অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
রোজ ভ্যালি এজেন্ট ইউনিয়নের সম্পাদক অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সংস্থা থেকে ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বেআইনি ভাবে অন্যত্র টাকা সরানোর অভিযোগে শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। শনিবার তাঁকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করায় ইডি। আদালতে তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্তের আয়কর রিটার্ন পরীক্ষা করেই তাঁরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। আমানতকারীদের টাকা অন্যত্র সরাতে অমিত কী ভাবে রোজ ভ্যালিকে সাহায্য করেছেন, তা জানতে আদালতের নির্দেশে এ দিন তাঁকে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করেছেন ইডি-র তদন্তকারীরা।
এ দিনই রোজ ভ্যালির আরও ১৮০টি অ্যাকাউন্ট আটক করেছে ইডি। শনিবার রাতে ইডির এক আধিকারিক জানান, নতুন করে আটক হওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে ৩৬ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা রয়েছে। এর আগে রোজ ভ্যালির ২৮০০টি অ্যাকাউন্ট আটক করেছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে ২৫৪.৮৪ কোটি টাকা ছিল। যার ফলে রোজ ভ্যালির আর্থিক লেনদেন এবং সংস্থার কর্মীদের বেতন আটকে গিয়েছিল।
ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র এ দিন আদালতে জানান, রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে আমানতকারীদের টাকা অন্যত্র পাচারের তদন্তে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। ওই আইনজীবী অভিযোগ করেন, অনেক ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে, আমানতকারীদের কাছ থেকে এজেন্টরা টাকা সংগ্রহ করেছেন, কিন্তু সেই টাকা নির্দিষ্ট প্রকল্পে জমা না দিয়ে সরানো হয়েছে রোজ ভ্যালিরই কোনও সহযোগী সংস্থায়। বিনিয়োগের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে আমানতকারীরা টাকা ফেরত চাইলে, সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাঁদের টাকা ওই প্রকল্পে জমাই পড়েনি।
আইনজীবী অভিজিৎবাবু আদালতে জানান, আমানতকারীরা টাকা ফেরত না পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে এজেন্ট ইউনিয়নের সম্পাদক অমিত তাঁদের হুমকি দিতেন। আমানতকারীদের টাকা অন্যত্র সরানোর ব্যাপারে অমিতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে ইডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ। সেই ভূমিকা খতিয়ে দেখতে অমিতকে ইডি-র হেফাজতে রাখার জন্য অভিজিৎবাবু আদালতে আবেদন জানিয়েছেন।
অমিতের আইনজীবী অজিত মিশ্র আদালতে বলেন, অভিযুক্ত নিজে রোজ ভ্যালির এজেন্ট। তিনি কমিশন বাবদ যা রোজগার করেছেন, তার ভিত্তিতেই আয়করের রিটার্ন দাখিল করেছেন। যিনি সরকারকে কর দিয়েছেন, তাঁকে কী করে বেআইনি ভাবে টাকা সরানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল, বোঝা যাচ্ছে না।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক গোপালচন্দ্র কর্মকার অভিযুক্তের জামিনের আবেদন নাকচ করেন এবং তাঁকে পাঁচ দিনের জন্য ইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy