Advertisement
E-Paper

শেষকৃত্য সম্পন্ন না-করে বাবার পচাগলা দেহ আগলে রাখেন কন্যা, স্থানীয়দের তৎপরতায় ঘটনার তদন্তে কসবা থানার পুলিশ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোসপুকুরের ওই আবাসনের একতলায় স্ত্রী অর্চনা সেন ও কন্যা সম্প্রীতি সেনের সঙ্গে থাকতেন সুমিত। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। অবসরের পর থেকে স্থানীয়েরাই তাঁদের খেয়াল রাখতেন ও দেখাশোনা করতেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০২:৩৪

—প্রতীকী চিত্র।

ফের শহরে রবিনসন স্ট্রিট-কাণ্ডের ছায়া। বদ্ধ ঘরে বাবার পচাগলা দেহ আগলে বসেছিলেন কন্যা। সঙ্গে ছিলেন মাও। অবশেষে স্থানীয়দের তৎপরতায় সোমবার দক্ষিণ কলকাতার কবসা বোসপুকুরের ওই আবাসন থেকে দেহটি উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতের নাম সুমিত সেন (৬৪)। দেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সুমিত কবে, কী ভাবে, কী করে মারা গিয়েছেন তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে তারা জানতে পেরেছে, দীর্ঘ দিন ধরে ওই পরিবারের তিন সদস্যই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোসপুকুরের ওই আবাসনের একতলায় স্ত্রী অর্চনা সেন ও কন্যা সম্প্রীতি সেনের সঙ্গে থাকতেন সুমিত। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। অবসরের পর থেকে স্থানীয়েরাই তাঁদের খেয়াল রাখতেন ও দেখাশোনা করতেন। বাড়ি থেকে তাঁরা খুব একটা বের হতেন না। গত তিন দিন ধরে সুমিতের পরিবারের কাউকে আবাসনের বাইরে দেখতে পাওয়া যায়নি। বাড়ির দরজা বন্ধই ছিল। তাতে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তাঁরা কসবা এলাকায় সেন পরিবারের এক আত্মীয়কে ফোন করে বিষয়টি জানান। ওই আত্মীয় সম্প্রীতিকে ফোন করে পরিবারের খোঁজ নেন। জানা গিয়েছে, সম্প্রীতি ফোনে বারবার জানাতেন তাঁর মা-বাবা ভালে আছেন। কিন্তু মা-বাবাকে ফোন দিতে বললে তিনি ফোন দিতেন না বলে অভিযোগ। এতেই সন্দেহ বাড়তে থাকে। সোমবার ওই আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা সুমিতের আবাসনে যান। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বহুবার ডাকাডাকির পরও দরজা কেউ খোলেনি বলে আভিযোগ। এর পর তাঁরা কসবা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে, ঘরের মধ্যে পচাগলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই ব্যক্তির দেহ। তাঁকে আগলে রেখেছেন তাঁর মেয়ে ও স্ত্রী। দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে ঘর থেকে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিট-কাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল কলকাতা। এক বৃদ্ধের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ জানতে পারে ওই ঘরেই দীর্ঘ মাস ধরে রাখা আছে এক মহিলার কঙ্কাল। তাকে খাইয়ে দিত পার্থ দে। কঙ্কালটি ছিল তাঁর দিদির। অগ্নিদগ্ধ যে দেহ উদ্ধার হয়েছিল তা ছিল তাঁর বাবার। ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন পার্থও। ২০১৫ সালের সেই ঘটনা নিয়ে ‘রবিনসন স্ট্রিট হরর স্টোরি: মিথ ভার্সেস রিয়েলিটি’ নামে তথ্যচিত্রের সিরিজ করেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। কলকাতার কসবা, গড়ফা, নেতাজি নগর, সল্টলেকেও বিভিন্ন বছরে দেখা গিয়েছে এই কাণ্ডের ছায়া। একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, বারাসত, মেমারি-সহ একাধিক জায়গায়। আবার গোরখপুর, বারাণসী, হায়দরাবাদেও দেখা গিয়েছিল রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া।

unnatural death kasba police investigation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy