নভেম্বরে কাজ শুরুর কথা থাকলেও এখনও তা হয়নি। নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথে বেলেঘাটা এবং গৌরকিশোর ঘোষ স্টেশনের মধ্যবর্তী অংশের অসম্পূর্ণ কাজ থমকে থাকায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। আশ্বাস দেওয়ার পরেও কেন সময়মতো চিংড়িঘাটা মোড়ের ট্রাফিক ব্লক করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। অবিলম্বে নতুন তারিখ জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে।
নিউ গড়িয়া থেকে মেট্রোয় চেপে এখন বেলেঘাটা পর্যন্ত যাওয়া যায়। কিন্তু বিমানবন্দর পর্যন্ত পরিষেবা নেই। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজ চিংড়িঘাটায় আটকে রয়েছে। প্রায় গোটা প্রকল্প শেষ হলেও মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশে কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে যাওয়ায় নতুন লাইনের সম্প্রসারণ আটকে রয়েছে। এ নিয়ে হাই কোর্টে মামলাও হয়। তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলাও হয়। শুনানি শেষে আদালত জনগণের স্বার্থের কথা ভেবে সব পক্ষকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশমতো বৈঠকও হয় রাজ্য সরকার এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। নভেম্বর থেকে কাজ শুরুর কথা থাকলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কলকাতা পুলিশের তরফে ছাড়পত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি) না-মেলায় কাজ শুরু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আবার হাই কোর্টের দৃষ্টিআকর্ষণ করেছিল নির্মাণকারী সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)।
সেই সংক্রান্ত আবেদনের ভিত্তিতে লিখিত বক্তব্য জানাতে বলেছিল হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। লিখিত বক্তব্য জমা পড়ার পর সোমবার বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়। সেই শুনানিতে রাজ্যের ভূমিকায় বিরক্তিপ্রকাশ করে আদালত। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলে, ‘‘সব পক্ষের মধ্যে বৈঠক হওয়ার পর আপনারা কথা দিলেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দিন ক্ষণও জানালেন। তার পরেও সেটা কার্যকর হল না। এই প্রকল্প শেষ হয়ে সেটা রাজ্যের মানুষেরই সুবিধা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কথা বলার পরেও এখন নতুন কারণ দেখাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন:
কেন চিংড়িঘাটায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি, তার যুক্তি দিতে গিয়ে রাজ্যের এজি আদালতে জানান, যে জায়গায় ‘ব্লক’ করা হবে, সেই অংশে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতেও সমস্যা হবে। রাজ্যের যুক্তি শুনে হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এখন যে সমস্যার কথা বলছেন, সেটা কি এত দিন বুঝতে পারলেন? নিশ্চয় তা নয়। যে কোনও সময়ই এই সমস্যা হবে। তা বলে কি এমন একটা প্রকল্প আটকে থাকবে?’’
তার পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজ্যকে নির্দেশ দেন, ‘‘আগামী বৃহস্পতিবার নতুন তারিখ জানাতে হবে আদালতকে। রাজ্যের নতুন কোনও যুক্তি আদালত শুনবে না। আগে ওই কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করার জন্য রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে।’’