পরিচালক অরিন্দম শীলের উপরে চাঁদার জুলুম ঘিরে ক্রমশ টানাপড়েন বাড়ছে। লাটাগুড়ির যে ক্লাবের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অরিন্দমবাবুর উপরে জুলুমের অভিযোগ উঠেছিল, সেই ক্লাবটির পুজোই বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে ওই ক্লাবের কর্তাদের আশঙ্কা। সেই আশঙ্কা ছড়িয়েছে লাটাগুড়িতেও। অনেক বাসিন্দা ক্ষুণ্ণ। ওই ক্লাবের পাশে দাঁড়িয়েছে লাটাগুড়ির বেশ কয়েকটি ক্লাবও। অরিন্দমবাবুর উপরে জুলুমের নিন্দা করলেও, ওই বাসিন্দাদের দাবি, পুজো বন্ধ করে দেওয়া হলে, প্রশাসন ঠিক করবে না। ওই ক্লাবের পুজো বন্ধ রাখলে লাটাগুড়িতে কোনও পুজোই হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসিন্দারা। তৈরি হয়েছে লাটাগুড়ির সম্মান রক্ষা কমিটিও।
মঙ্গলবার রাতে লাটাগুড়ির একটি পুজো কমিটির সদস্যরা একটি রিসর্টে ঢুকে অরিন্দমবাবু ও তাঁর সহকর্মীদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। অরিন্দমবাবু সে কথা প্রশাসনকে জানান। খোঁজখবর শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, রিসর্টের নিরাপত্তা নিয়েও। তারপরেই সক্রিয় হয় পুলিশ। শুক্রবার জেলা পুলিশ রিসর্টে বহিরাগতদের ঢোকা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিটি রিসর্টের প্রবেশ পথে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো নিয়েও চিন্তা করছে প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘পর্যটকদের যাতে কোনও রকম হেনস্থা হতে না হয়, তার জন্য কড়া পদক্ষেপ হচ্ছে।’’
অরিন্দমবাবুর উপরে জুলুমের অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছে তৃণমূলের নামও। অভিযোগ, সে দিন যে যুবকেরা রিসর্টে ঢুকেছিলেন, তাঁরা তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ। তাতে শাসক দলের অস্বস্তি বেড়েছে। আবার এখন লাটাগুড়িতে সব পুজো বন্ধ হয়ে গেলেও তৃণমূল নেতারা বিব্রত হবেন। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ যা করার করবে। এর মধ্যে রাজনীতি টেনে আনাটা খুব দুঃখজনক।’’
ওই ক্লাবের পুজো কমিটির সম্পাদক জগবন্ধু সেন বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবের যে সদস্যেরা অভিযুক্ত তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে। যা ঘটেছে তাতে প্রশাসন বুঝিয়েই দিয়েছে যে এ বার পুজোর অনুমতি দেওয়া হবে না। তাই পুজো বন্ধ করে দিচ্ছি।’’ মণ্ডপ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘ওই পুজোর অনুমতির প্রশ্ন উঠছে কেন? ওঁরা তো আবেদনই করেননি।’’ জগবন্ধুবাবু বলেন, ‘‘প্রতিবারই মণ্ডপ নির্মাণ আগে শুরু করে দেওয়া হয়। তারপরে পুজোর মুখে আবেদন করা হয়। কিন্তু এ বার প্রশাসন সেই আবেদন গ্রাহ্য করবে না বলে বুঝিয়ে দিয়েছে।’’ প্রশাসনের এক কর্তাও জানান, চাঁদার জুলুমের অভিযোগ উঠলে পুজোর অনুমতি সাধারণত দেওয়া হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy