Advertisement
E-Paper

সামগ্রী পাচারের অভিযোগ রেলকর্তার বিরুদ্ধে, বিক্ষোভ

রেলের সামগ্রী বাইরে পাচার করার অভিযোগ উঠল রেলেরই এক পদস্থ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ওই আধিকারিককে বরখাস্ত করার দাবিতে তাঁকে ঘেরাও করে দিনভর বিক্ষোভও দেখালেন রেলের কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৯

রেলের সামগ্রী বাইরে পাচার করার অভিযোগ উঠল রেলেরই এক পদস্থ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ওই আধিকারিককে বরখাস্ত করার দাবিতে তাঁকে ঘেরাও করে দিনভর বিক্ষোভও দেখালেন রেলের কর্মীরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে এ ভাবে রেলের বহু মূল্যবান জিনিস পাচার করা হয়েছে। কিন্তু ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার কিঙ্গস রোডে, পূর্ব রেলের সিগন্যাল তৈরির কারখানায়। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১৫ বছরের পুরোনো সিগন্যাল তৈরির ওই কারখানার ওয়ার্কশপ থেকে মূল্যবান কাঠ, পিতল তামা পাচারের অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। মঙ্গলবার ফুলের টব বসানোর জন্য তৈরি করা লোহার খাঁচা একটি লরি করে পাচার করার সময়ে বমাল ধরে ফেললেন রেলেরই কর্মীরা। রেল রক্ষী বাহিনী এসে আটক করে লরি চালককে। রেল রক্ষী সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় চালকই জানান কে বা কারা তাঁকে ওই খাঁচাগুলি কোথায় নিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এই তথ্য জানার পরই রেলের ওই কারখানার কর্মীরা চিফ ওয়ার্কস ম্যানেজার হেমন্ত কুমারের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ফুলের টব রাখার ওই লোহার খাঁচা রেলের ওয়ার্কশপে তৈরি করে নিউ আলিপুরে নিজের বাড়িতে পাঠাচ্ছিলেন হেমন্তবাবু। কর্মীদের আরও অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে রেলের বহু মূল্যবান জিনিস পাচার করা ছাড়াও কারখানায় নানা দুর্নীতিমূলক কাজকর্ম করে চলেছেন তিনি। এত দিন কর্মীরা সঠিক প্রমাণ না পাওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারেননি। কিন্তু এ দিন হাতেনাতে ধরে ফেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা।

এ দিন দুপুরে রেলের ওই ওয়ার্কশপে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার সামনে হেমন্ত কুমারকে গ্রেফতার ও পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কিছু কর্মী। সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে আটক করা লরিটি। কারখানার এক প্রবীণ কর্মী দীপঙ্কর গুহের অভিযোগ, ‘‘গত তিন বছর ধরে চিফ ওয়ার্কস ম্যানেজার রেলের মাল পাচার ছাড়াও নানা দুর্নীতিমূলক কাজ করছেন। কারণে অকারণে কর্মীদের গালিগালাজ করা ছাড়াও তাঁদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজও করান হেমন্তবাবু। বদলি, পদোন্নতির ক্ষেত্রে সব সময়ে ঘুষ চান।’’

পূর্ব রেল মেন্স ইউনিয়ন (কেন্দ্রীয়)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক অম্বর দত্ত বলেন, ‘‘ভারতে রেলের ১০টি সিগন্যাল তৈরির কারখানার মধ্যে এটি অন্যতম। এই কারখানায় এই ধরণের দুর্নীতি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ওই অফিসারের বিরুদ্ধে পূর্ব রেলের উপর মহলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হেমন্ত কুমার। তিনি বলেন, ‘‘এ সব বানানো গল্প। আমি কিছুই করিনি। কোনও কর্মচারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করিনি। আমাদের ভিজিল্যান্স দফতর আছে, তদন্ত করে দেখুক না।’’

ভিজিল্যান্স দফতর হেমন্তবাবু বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবে তা জানিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মলহোত্র বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ এসেছে আমাদের কাছে। ভিজিল্যান্স দফতরের তদন্তে ওই চিফ ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে শুধু সাসপেণ্ড নয়, চাকরি থেকেও তাঁকে বরখাস্ত করা হতে পারে।’’

railway smuggling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy