Advertisement
E-Paper

কোচবিহারে ডাক্তারি-ছাত্রী অপমৃত্যুতেও ‘হুমকি-প্রথা’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৮

এক বছর আগে, ডাক্তারি প্রথম বর্ষের ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় হুমকি-প্রথার (থ্রেট কালচার) অভিযোগ উঠল কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। নাম জড়াল টিএমসিপি-র। পূর্ব বধর্মানের বাসিন্দা মেয়েটির বাবার অভিযোগ, সেই সময় তদন্ত ঠিকঠাক হয়নি, ধামাচাপার চেষ্টাও হয়। ঘটনায় আর জি কর-কাণ্ডের ছায়া দেখছেন অনেকে। অভিযোগ, স্বাস্থ্য-শিক্ষায় প্রভাবশালী চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ বহিরাগত দুই চিকিৎসকের মাধ্যমে সেই সময় ওই কলেজ ‘নিয়ন্ত্রণ’ করত। বুধবার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ওই দুই চিকিৎসক অনুমতি ছাড়া কলেজে ঢুকতে পারবেন না।

পরিবারের দাবি, ২০২৩-এর ১১ জুন রাতে কলেজ হস্টেলে ওই ছাত্রীর দেহ মেলে। বর্ধমানের ওই তরুণীর বাবা বুধবার বলেন, “মৃত্যুর প্রায় ছ’ঘণ্টা পরে খবর দেওয়া হয়। কোচবিহারে আমাদের ডাক্তারদের কটেজে রাখা হয়। উৎকণ্ঠায় ছিলাম। কিন্তু আমাদের কাছে কেউ আসেননি এবং মেয়েকেও দেখতে দেওয়া হয়নি। ঘণ্টা দেড়েক পরে মেয়ের সহপাঠীদের বলি, ‘ওকে দেখতে চাই’। তখন একটি ঘরে শায়িত, গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মেয়েকে দেখানো হয়। ময়না তদন্তের ঠিক আগে। এত ক্ষণ কেন দেখতে দেওয়া হয়নি বা মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কেন জানানো হল না, এটাই অবাক করে।”

ওই পড়ুয়ার বাবা দাবি করেন, ডাক্তারি পড়া নিয়ে তাঁর মেয়ে উৎসাহিত ছিলেন। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির পরে তাঁর কিছু ধারণা পাল্টে যায়। তাঁর অভিযোগ, “হস্টেলে ‘ইন্ট্রো’র (প্রাথমিক পরিচয়) নামে র‌্যাগিং করা হত। পরীক্ষার হলে নকল করা হত। তাতে মেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে।” তিনি আরও বলেন, “অধ্যক্ষকে জানাতে চেয়েছিলাম। মেয়ে বারণ করেছিল। আসলে ওখানে ভয়ের পরিবেশ ছিল।” তাঁর সংযোজন, “ওই ঘটনা নিয়ে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানাই। কিছু হয়নি। পুলিশ ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখিয়ে বলে, এটি সাধারণ আত্মহত্যা।” মেয়েটির মা বলেন, “কলেজে ২০২২ সালে ভর্তি হয় মেয়ে। যত দিন গড়ায়, ও ততই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তে থাকে।” ওই ছাত্রীর এক সহপাঠী এ দিন বলেন, “শেষের দিকে ওকে একটু বিমর্ষ দেখেছি।” টিএমসিপির এক নেতা বলেন, “ওঁর মা-বাবা কোনও অভিযোগ জানাননি।”

এ দিন কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে হুমকি-প্রথা নিয়ে আলোচনা হয়। অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, “ওই সময় কেউ অভিযোগ জানাননি। ওই ছাত্রীর বাবাকে বলেছিলাম, ‘কেন অভিযোগ জানালেন না? তা হলে কিছু পদক্ষেপ করতে পারতাম’। তবে সেই সময় ভয়ের পরিবেশ ছিল, তা অস্বীকার করা যায় না।” তিনি জানান, কিছু ‘বহিরাগত’ ডাক্তার কলেজের পড়ুয়াদের একটি গোষ্ঠীকে ‘চালান’। তাঁদের এক জন দীপায়ন বসু, অন্য জন সংবেদ ভৌমিক। দীপায়ন বসু কোচবিহার ১ ব্লকের বিএমওএইচ। তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মেসেজের জবাব মেলেনি। দেওয়ানহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সংবেদ ভৌমিক। তিনি বলেন, “হাউসস্টাফ হিসেবে কোচবিহার মেডিক্যালে কাজ করার সময়ে অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই সূত্রেই গিয়েছি।” ছাত্রীর বাবা বলেন, নতুন মামলা করার কথা ভাবছি না। তবে চাইব, রাজ্যের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন হুমকি-প্রথা না থাকে।”

Cooch Behar MJN Medical College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy