প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দর নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে আজ, শুক্রবার কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। দিল্লিতে ওই বৈঠক হবে।
নবান্নের বক্তব্য, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা শিল্পমন্ত্রী অমিতবাবুকে এ নিয়ে আলোচনার জন্য দিল্লি পাঠাবেন বলে মাস পাঁচেক আগেই জাহাজমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সামনে আসতেই দুই তরফের যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এখন উত্তরপ্রদেশের ফলাফল ঘোষণার পরে পরিস্থিতি অনেকটা বদলে গিয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অমিত। মমতা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘তাজপুর, কুলপি এবং ভোরসাগর (সাগর) বন্দর নির্মাণ নিয়ে আলোচনা হবে।’’ জাহাজ মহলের আশা, চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজ্য তার অবস্থান পরিবর্তন করলে যৌথ উদ্যোগে তাজপুর বন্দর হতে পারে।
বৈঠক নিয়ে কথা বলতে চাননি অমিতবাবু। তবে বন্দরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘দুই মন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তুতি শেষ। কলকাতা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবুও দিল্লির বৈঠকে থাকবেন।’’
তাজপুর নিয়ে বিরোধ কোথায়?
নবান্নের খবর, রাজ্য-কেন্দ্র যৌথ উদ্যোগে সাগরে একটি বন্দর হওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্য ঠিক করেছে, সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে দিঘার কাছে তাজপুরে আরও একটি বন্দর নির্মাণ করবে তারা। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে কেন্দ্র। মন্ত্রকের যুক্তি,আগামী দিনে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে অতিরিক্ত ৭৫ লক্ষ টন পণ্য খালাস হবে। এই পণ্য খালাসের জন্য বাড়তি একটি বন্দর প্রয়োজন। এই প্রেক্ষিতে সাগর এবং তাজপুরের মধ্যে কোথায় পণ্য খালাস হবে, তা নিয়ে নতুন দুই বন্দরের মধ্যে আকচাআকচি হবে। এতে কোনও বন্দরই লাভবান হবে না।
জাহাজ মহলের আরও বক্তব্য, তাজপুরের অবস্থানগত সুবিধা অনেক। সেখানকার নাব্যতা বেশি, জোয়ার নির্ভরতা কম। উপরন্তু রেল এবং সড়ক যোগাযোগ ভাল হওয়ায় সেখানে হলদিয়ার পণ্যও চলে যাবে। বেসরকারি সংস্থার হাতে তাজপুর বন্দর গেলে হলদিয়াও অচল হতে পারে। তাই কেন্দ্র চায়, ৭৪ ভাগ অংশীদারিত্ব নিয়ে জাহাজ মন্ত্রকই তাজপুরে বন্দর নির্মাণ করুক। রাজ্যের হাতে থাক বাকি ২৬ ভাগ অংশীদারিত্ব। কেন্দ্রের মতামত উড়িয়ে রাজ্যের বক্তব্য, তাজপুর বন্দর যাক বেসরকারি হাতে। সাগরের বন্দরটি তৈরি করুক কেন্দ্র। কেন্দ্র জানিয়েছে, তাজপুর না পেলে তারা সাগর থেকেও সরে দাঁড়াবে। এই পরিস্থিতিতে নিতিন-অমিত বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
দুই মন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু নবান্নে গিয়ে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy