E-Paper

‘নিট’ পরীক্ষার্থীদের জন্য সাহায্যের আর্জি রাজ্যকে

এ দিন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ভাতার, বর্ধমান, নৈহাটি থেকে নিট পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা এসেছিলেন। অনেকেই কাঁদছিলেন। গত বছর ৬০০ নম্বর পেয়ে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পাওয়া সম্ভব ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৭:৫৮

—প্রতীকী ছবি।

‘নিট’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের বক্তব্য জানানোর দিনেই বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদের ঢেউ উঠল রাজ্যে। বৃহস্পতিবার পুলিশ সল্টলেকের করুণাময়ীতে ডিএসও-র ৬৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিটের অনিয়ম নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হয় এসএফআই। একই দিনে নিটের ‘উদ্ভট ফলাফলে’ হতাশ রাজ্যের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশে দাঁড়াতে কিংবা আইনি সহায়তা দিতে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানালেন হৃদ্‌রোগ শল্য চিকিৎসক কুণাল সরকার, চিকিৎসক তথা নিট পরীক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষক অর্কদীপ বিশ্বাস প্রমুখ।

এ দিন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ভাতার, বর্ধমান, নৈহাটি থেকে নিট পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা এসেছিলেন। অনেকেই কাঁদছিলেন। গত বছর ৬০০ নম্বর পেয়ে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পাওয়া সম্ভব ছিল। এ বার তা কার্যত অসম্ভব। কুণাল বলেন, “রাজ্য সরকার পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকদের সহায়তার জন্য একটি সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করুক। দরকার মতো পরীক্ষার্থীদের আইনি পরামর্শ দিক। যে পরীক্ষার্থীরা কোর্টে যাচ্ছেন, এই পরীক্ষার নিয়ামকেরা তাঁদের কথাই শুনছেন।” গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ অডিটের দাবিও করেন তিনি। নিটে ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ পেয়ে প্রথম হয়েছে ৬৭ জন। গত ৪ জুন ভোটের ফলের দিন নিটেরও ফল বেরোয়। হুগলির পোলবার এক পরীক্ষার্থী তখন থেকেই নিখোঁজ বলে অভিযোগ। অর্কদীপও বলেন, “অনেক পরীক্ষার্থী হতাশায় ভুগছেন। এটা মাথা ঠান্ডা রেখে লড়ার সময়।”

দেখা যাচ্ছে, গত বছর ৬০০ নম্বরে ২০ হাজার র‌্যাঙ্ক পেলেও এ বার একই নম্বরে ৭০ হাজার র‌্যাঙ্ক হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় ৩০০ শতাংশ ‘র‌্যাঙ্ক ইনফ্লেশন’ বা বৃদ্ধি। কুণালের কথায়, “এক বছরে দু’-তিন শতাংশ হেরফের হতে পারে। কিন্তু ৩০০ শতাংশের এই বুদ্বুদ ভাঁওতাবাজি। গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাতেই বিরাট দুর্নীতি হয়েছে। এর পাশে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিও শিশু মনে হবে।”

এ দিনই কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর ‘গ্রেস নম্বর’ বাতিল করা হবে। পাশাপাশি, তাঁদের আগামী ২৩ জুন ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য শাখার সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, “পুরো পরীক্ষা ব্যবস্থাই দুর্নীতিতে ডুবে। গ্রেস মার্ক বাতিলের বিষয়টি সামগ্রিক দুর্নীতি ঢাকার চেষ্টা।” এআইডিএসও-র সাধারণ সম্পাদক সৌরভ ঘোষ বলেন, “দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে ছড়িয়ে রয়েছে।” নিটে অতীতেও বার বার স্বজনপোষণ, বাছাই কোচিং সেন্টারের রমরমা থেকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সামনে এসেছে বলে দাবি করে দু’টি সংগঠনই কাউন্সেলিং স্থগিত রেখে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছে। রাজভবন এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “চাকরির পরীক্ষা বা ভর্তির পরীক্ষা, দুর্নীতি এমন ভাবে বাসা বেঁধেছে যে, ভরসা উঠে যাচ্ছে। শুধু আবার পরীক্ষার নির্দেশেই হবে না, দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy