প্রতীকী ছবি।
ভিড় কমাতে দণ্ডিত এবং বিচারাধীন, দু’ধরনেরই কিছু কিছু বন্দিকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রোগ রুখতে যথাসম্ভব সুরক্ষারও ব্যবস্থা হয়েছে জেলগুলিতে। রাজ্যের বিভিন্ন স্তরে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও এত দিন লৌহকপাট ওই ভাইরাসকে ঠেকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু এ বার সেখানেও ঢুকে পড়ল করোনা। আক্রান্ত হয়েছেন জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলের এক ষাটোর্ধ্ব বন্দি।
ওই দণ্ডিত আসামির সংক্রমণে উদ্বিগ্ন বন্দি, রক্ষী, আধিকারিক— সকলেই। কারা দফতরের বক্তব্য, ওই বন্দি কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই জেল থেকে নয়, হাসপাতাল থেকেই তাঁর সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে সওয়াল করলেও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় কারা দফতর। সেই জন্য অন্তত ৩০০ বন্দির লালারসের নমুনার পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছে কারা দফতর।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামিকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় মে মাসের চতুর্থ সপ্তাহে। সেখানেই তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। তার পরে নড়েচড়ে বসেছে কারা দফতর। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘ওই বন্দি হাসপাতালে ছিলেন। সেখান থেকে সংক্রমণ হতে পারে। তবে অন্য বন্দিদের নমুনা পরীক্ষা হবে।’’
জলপাইগুড়ি জেলের বন্দিদের লালরসের নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হলেও বাকি জেলগুলিতে অবশ্য নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশ যায়নি। শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা দণ্ডিত বন্দি তুষার দাস। সেই ঘটনার পরে প্রেসিডেন্সির বিভিন্ন বন্দির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। এমনকি মৃত তুষারের রিপোর্টও নেগেটিভ আসে।
তবে করোনা আবহের শুরু থেকে দফতরের নির্দেশিকার পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন জেলের কর্তৃপক্ষ। কোথাও নতুন বন্দিদের রাখার জন্য বাড়তি নিভৃতবাস কেন্দ্রের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কোথাও আবার নতুন বন্দিকে সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জেলের কর্মীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে কারা দফতর।
তবু নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না কোনও জেল-কর্তৃপক্ষ। জলপাইগুড়ি জেলের বন্দির করোনা সংক্রমণের খবর শোনার পরে জেলের কর্মী-আধিকারিকদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কী সাংঘাতিক! তবে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। সুরক্ষা বিধিকে সঙ্গী করেই এগোতে হবে আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy