Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Education in West Bengal

নির্দেশ ঘিরে পরিকাঠামো ও ‘ড্রপ আউট’ নিয়ে প্রশ্ন

রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য জানান, অতিমারি-পরবর্তী পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে কমছে।

students.

নতুন ব্যবস্থা শিক্ষার বেসরকারিকরণের পথ বলেও অভিযোগ উঠছে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৩
Share: Save:

জাতীয় শিক্ষা নীতি মেনে স্নাতক স্তরে ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর করার রাজ্য সরকারি নির্দেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে শিক্ষা মহলের একাংশ। বিরোধিতা করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেকেও। তাঁদের মতে, এই নতুন নিয়মে অনার্স চার বছর হলে পড়ুয়াদের মধ্যে ড্রপ আউটের প্রবণতার আশঙ্কা যেমন থাকছে, তেমনই পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন আছে। এই নতুন ব্যবস্থা শিক্ষার বেসরকারিকরণের পথ বলেও অভিযোগ তাঁদের।

রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য জানান, অতিমারি-পরবর্তী পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে কমছে। চার বছরের পাঠ্যক্রম তা আরও বাড়াবে। স্নাতক স্তরে গবেষণার ছাড়পত্র পাওয়া, এক বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম, এক এবং দু’বছরের সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা পাওয়ার ব্যবস্থা, একাধিক বার পড়া ছেড়ে যাওয়া এবং ফের শুরু করার সুযোগ আদতে সার্বিক বেসরকারিকরণের পথকে সুগম করবে। শনিবার হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষক সংগঠন ‘আইফুকটো’-র ৩২তম সম্মেলনে ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ চালুর বিরোধিতা করেছেন এই রাজ্যের অধ্যাপক প্রতিনিধি মানস জানাও।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখে যা-ই বলুক, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের শিক্ষা নীতি মেনেই চলছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে ৩০ হাজারের বেশি কলেজ শিক্ষক পদ খালি। বাড়তি সময়ের কোর্স চালু হলে এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক অন্তত নিয়োগ করতেই হবে। রাজ্য তা করবে? নাকি ‘সিভিক টিচার’ আনা হবে?’’ পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসইউসির রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘রাজ্যের চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল ব্যবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের যতটুকু শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ ছিল তা-ও ধ্বংস হবে।’’ ডিএসও-র রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘অনার্সের ক্ষেত্রে এক বছরের বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হল৷ গরিব পরিবারের পড়ুয়ারা তা বহন করতে পারবে না। ড্রপ আউট বাড়বে।’’

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘‘আগে যখন খসড়া জাতীয় শিক্ষা নীতিতে মাঝপথে পড়া ছেড়ে ফের ফিরে আসার পদ্ধতির (মাল্টিপল এন্ট্রি-এগজ়িট) প্রস্তাব এসেছিল, তখনই আমরা জানিয়েছিলাম যে, সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই পদ্ধতি কার্যকর করতে গেলে পরিকাঠামো এবং পর্যাপ্ত মানব সম্পদ প্রয়োজন। তার জন্য আর্থিক অনুদান কী ভাবে দেওয়া হবে তার কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশ জাতীয় শিক্ষা নীতিতে নেই। এ ব্যাপারে ইউজিসি কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আর্থিক অনুদানের সুস্পষ্ট নির্দেশ প্রয়োজন।’’ তিনি এ-ও জানান, সম্প্রতি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সভার আলোচনা অনুযায়ী, তাঁরা নিজ নিজ স্তরে ইউজিসি-র নির্দেশিকা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। সেই অনুযায়ী শিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ওই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Education Policy West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE