Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Salman Khan

স্ত্রীকে ‘খুনের’ চেষ্টা, গ্রেফতার আনিসের খুড়তুতো ভাই-সহ ২

আনিসের অপমৃত্যুর মামলায় মূল সাক্ষী সলমন। আমতার সারদা গ্রামে আনিসের বাড়ির কিছুটা দূরে তাঁর বাড়ি। শুক্রবার আদালতে যাওয়ার পথে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন সলমন।

Anis Khan.

হাওড়ার আমতার মৃত ছাত্রনেতা আনিস খান। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আমতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৩ ০৬:৪১
Share: Save:

সাংসারিক অশান্তির জেরে স্ত্রীকে শৌচাগার পরিষ্কার করার অ্যাসিড খাইয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল হাওড়ার আমতার মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের খুড়তুতো ভাই সলমনের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অভিযুক্ত সলমনের বাবা জালেম খানও। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সলমনের স্ত্রী হোসেনারা খাতুন উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনিসের অপমৃত্যুর মামলায় মূল সাক্ষী সলমন। আমতার সারদা গ্রামে আনিসের বাড়ির কিছুটা দূরে তাঁর বাড়ি। শুক্রবার আদালতে যাওয়ার পথে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন সলমন। তাঁর দাবি, ‘‘হোসেনারার বাবা পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মেয়েকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আনিসের অপমৃত্যুর মামলার মূল সাক্ষী হওয়ায় পুলিশ বহুবার আমাকে সরে দাঁড়াতে বলেছে। হুমকিও শুনতে হয়েছে। কিন্তু সরে দাঁড়াইনি। ওই মামলার সিবিআই তদন্ত চেয়েছি। তাই পুলিশ শ্বশুরমশাইকে কাজে লাগিয়ে আমাকে বন্দি করে রাখতে চাইছে।’’ সলমনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি আনিসের দাদা সামসুদ্দিনেরও।

পুলিশ এ অভিযোগ মানেনি। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই মহিলার বাবার অভিযোগ পাওয়ামাত্র পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।’’ ধৃতদের শুক্রবার উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

কী হয়েছিল বৃহস্পতিবার রাতে?

হোসেনারার বাবা শেখ হাসিবুল জানান, রাত ১২টা বেজে যাওয়ার পরেও সলমন বাড়ি ফেরেননি। হোসেনারার ফোনও ধরেননি। পরে হোসেনারার থেকে বিষয়টি জেনে জালেম খান ছেলেকে খুঁজতে পাড়ার ক্লাবে যান। পিছন পিছন হোসেনারাও যান। ক্লাবেই ছিলেন সলমন। সেখানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কাতর্কি ও মারপিট হয়।

হাসিবুলের অভিযোগ, ঘরে ফিরে হোসেনারাকে সলমন ও তাঁর বাবা মারধর করেন। আগেও শ্বশুরবাড়িতে মেয়ের উপরে অত্যাচার হয়েছে। হোসেনারার অভিযোগ, ‘‘সলমন প্রতিদিন নেশা করে বাড়ি ফেরে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দেয়। না নিয়ে গেলে মারধর করে। বৃহস্পতিবার রাতে ও বাড়ি না-ফেরায় গোলমাল হয়। তারপরে ফিরলে শ্বশুর আমাকে ধরে রাখে। সলমন শৌচালয় পরিষ্কার করার অ্যাসিড জোর করে খাইয়ে দেয়।’’

এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সলমন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে কাজ ফিরতে দেরি হয়। তা নিয়ে হোসেনারা গোলমাল করে। আত্মহত্যার হুমকি দেয়। সে কথা পুলিশকে জানাতে যাই। পুলিশ আমাদের থানায় বসিয়ে রেখে হোসেনারার বাবাকে খবর দেয়। তিনি এসে পুলিশ নিয়ে আমাদের বাড়িতে গিয়ে মিথ্যা গল্প তৈরি করেন। মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন।’’

গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে আনিসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাকে বাড়িতে চার জন হানা দেয় এবং আনিসকে তিন তলার ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুন করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। আমতা আদালতে সেই মামলা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anis Khan Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE